Sunday, June 8, 2025
Home Blog Page 22

দেহরক্ষীর হাতেই খুন হন পৃথিবীর শীর্ষ ক্রিপ্টো রানি

0

১০ বছর আগের কথা! একজন বুলগেরিয়ান নারী ফন্দি আঁটেন নকল ক্রিপ্টোকারেন্সি ‘ওয়ান কয়েন’-এ মানুষদের কীভাবে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা যায়। এই বুলগেরিয়ায় জন্ম নেওয়া এই জার্মান উদ্যোক্তাকে বিশ্বাস করে লাখ লাখ মানুষ জীবনের সঞ্চয় গচ্ছিত রেখেছিল ক্রিপ্টো কারেন্সিতে। ২০১৭ সালে বুলগেরিয়ার সোফিয়া থেকে একটি বিমানে চড়ে অদৃশ্য হয়ে যান রুজা ইগনাতোভা। এরপর থেকে কোনো খোঁজ ছিল না। মঙ্গলবার (৩ জুন) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।

বিবিসি’র অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, মোট ১৭৫টি দেশের অসংখ্য মানুষের গচ্ছিত ৪০০ কোটি ডলার নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড ছিলেন ইগনাতোভা। 

তবে অপরাধীর অপরাধ প্রমাণ করতে সর্বপ্রথম তাকে আদালতের কাঠগড়ায় নিতে হবে। সেজন্য আগে খুঁজে বের করতে হবে ইগনাতোভাকে। কিন্তু তিনি যেন গায়েবই হয়ে গেলেন। এমন অবস্থায় এফবিআই-এর মোস্ট ওয়ান্টেড এই ক্রিমিনালকে অনুসন্ধান চালিয়েছিল বিবিসি।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অনুসন্ধানের পর বিবিসি’র অনুসন্ধানে উঠে আসে, বুলগেরিয়ার একটি মাফিয়া সংগঠনের প্রধান হিস্তোফোরস নিকোস আমানতিদিসের সঙ্গে ইগনাতোভার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। হিস্তোফোরস ‘তাকি’ নামেই বেশি পরিচিত। 

রিচার্ড রেইনহার্ড নামের একজন কর্মকর্তা রাজস্ব পরিষেবার পক্ষে ‘ওয়ান কয়েন’ নিয়ে তদন্ত করছিলেন। তিনি বলেন, ইগনাতোভা তাঁর দেহরক্ষী তাকিকে নিয়ে বুলগেরিয়ার বিমানে চড়ে গ্রিসের এথেন্সে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পরে দেহরক্ষী ফিরে এলেও ইগনাতোভা ফেরেননি। 

বিবিসির হাতে আসা নথি অনুযায়ী, মাদকের অর্থ পাচারের জন্য তাকি ওয়ান কয়েনের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছিলেন বলে সন্দেহ করে পুলিশ। 

তাকি বুলগেরিয়ায় মাদক চোরাচালানকারী হিসেবে বেশ কুখ্যাত। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, মাদকের অর্থ পাচারের জন্য তাকি ‘ওয়ান কয়েন’এর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছিলেন বলে সন্দেহ করে পুলিশ।

বুলগেরিয়ার অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইগনাতোভা নিজের সুরক্ষার জন্য তাকিকে প্রতি মাসে এক লাখ ইউরো দিতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইগনাতোভার রক্ষক হয়তো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন। 

বুলগেরিয়ার অনুসন্ধানী সাংবাদিক দিমিতার স্তোয়ানভের ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, নিখোঁজ হওয়ার এক বছর পর ইগনাতোভাকে হত্যা করা হয়। তবে ২০১৮ সালের শেষের দিকে তাকির নির্দেশে ইগনাতোভাকে খুন করা হয়। পরে তার দেহটি টুকরো টুকরো করে একটি প্রমোদতরি থেকে আইওনিয়ান সাগরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

আবার অনেকের দাবি, ইগনাতোভা আসলে বেঁচে আছেন। মূলত তার ওপর থেকে তদন্ত সংস্থাগুলোর দৃষ্টি সরাতেই মৃত্যুর খবর ছড়ানোর কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। 

তাহসানের নতুন পথচলায় সঙ্গী মিথিলা

0

সংগীতে, সিনেমায়, সঞ্চালনায় আর টিভি নাটকের সফল পথ পাড়ি দিয়ে এবার তাহসান খানের অভিষেক হচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। তাও আবার সঙ্গে থাকছেন প্রাক্তন মিথিলা!  

সম্প্রতি চরকির ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয় একটি অন্য রকম ছবি, যেখানে দেখা যায় একজন ক্রিকেটার হলুদ রঙের জার্সি পরে মাথায় হেলমেট ও হাতে ব্যাট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, কিন্তু তার চেহারা ঠিকমতো বোঝা যাচ্ছে না। ছবির ওপরে লেখা ছিলো ‌‘কে আসছে চরকিতে?’ এর পর থেকেই সোশ্যাল হ্যান্ডেলে এই পোস্ট নিয়ে চলতে থাকে নানা গুঞ্জন। 

সোমবার (৩ জুন) চরকির সিইও রেদওয়ান রনি জানান, পোস্টারের সেই ক্রিকেটার হলেন তাহসান খান। আরিফুর রহমানের পরিচালনায় ‘বাজি’ নিয়ে প্রথমবারের মতো ওটিটিতে আসছেন তিনি। সিরিজে তাকে একজন ক্রিকেটারের চরিত্রে দেখা যাবে। ক্রিকেটে বাজি ও বাজির প্রভাব ঘিরেই গড়ে উঠেছে এর গল্প। 

সাসপেন্স ড্রামা ঘরানার এই সিরিজে তাহসান-মিথিলা ছাড়াও অভিনয় করেছেন মিম মানতাসা, মনোজ প্রামাণিক, নাজিয়া হক অর্ষা, শাহাদাৎ হোসেন, পার্থ শেখ, তাসনুভা তিশা, আবরার আতহারসহ অনেকে।

মূল্যস্ফীতি লাগামহীন, অস্বস্তিতে অর্থনীতি

0

বাজার ব্যবস্থায় নিবিড় তদারকি করে মূল্যস্ফীতি সামাল দেওয়া, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং অতি জরুরিভাবে রিজার্ভ বাড়ানোর তাগিদ অর্থনীতিবিদদের।

নানামুখী সংকটে থাকা সীমিত আয়ের মানুষের সক্ষমতা কমছে; মাস শেষে আয়ে পোষাচ্ছে না, সঞ্চয় ভেঙে চলতে হচ্ছে কখনও সখনও। সাধারণের জীবনের এই চিত্র সামগ্রিক অর্থনীতির প্রতিফলন বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। কিছু সূচকের নিম্নমুখী দশায়, অন্য সূচকগুলোর স্বস্তি উবে গেছে; যে কারণে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতাও কমছে বলে মনে করছেন তারা।

তারা বলছেন, টাকার বিনিময় হার বাজারমুখী করা, সুদহার সীমা তুলে দেওয়া ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মত নীতি নির্ধারণী বিষয়গুলোতে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে বড় পরিবর্তন ধাক্কা হয়ে দেখা দিয়েছে, যা নতুন করে চাপ তৈরি করেছে উত্তরণের পথে থাকা অর্থনীতিতে।

তাদের পর্যবেক্ষণ, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কারণেই মূলত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার; এটিই এখন অর্থনীতির সূচকগুলোকে টেনে ধরছে, মূল অস্বস্তি তৈরি করছে।

লাগামের বাইরে চলে যাওয়া এই মূল্যস্ফীতি সামাল দেওয়ার মধ্যেই বাজার ব্যবস্থায় নিবিড় তদারকি, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং অতি জরুরিভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তারা।

কোভিড-১৯ মহামারীর চাপ সামলে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় থাকা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সংকট ডেকে আনে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধ। ডলার, জ্বালানি তেল ও খাদ্য শস্যের দাম বাড়তে থাকে। ব্যয় বেড়ে যায় ব্যবসা-বাণিজ্যের। সেই ধাক্কা সামাল দিতে গত দুই বছর ধরে বড় চাপে রয়েছে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক।

এ সময়কালে নিজস্ব চেষ্টার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ এর সঙ্গে এক বছর আগে ঋণ চুক্তিতে যায় বাংলাদেশ। চুক্তিতে যাওয়ার আগে ও পড়ে চাপে থাকা অর্থনীতি সামাল দিতে নানামুখী সংস্কারের মধ্যে দিয়ে এখন যাচ্ছে বাংলাদেশ।

সেই সংস্কারও অনেকটা চাপ তৈরি করছে সাধারণের উপর। জ্বালানিতে ভর্তুকি কমিয়ে দিতে বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করতে গিয়ে এক লাফে তা পৌঁছে গেছে ১১৭ টাকায়। আমদানি নিয়ন্ত্রণের মতো পদক্ষেপে আছে সরকার।

এতে ডলারের দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি ঋণের সুদের হারও বেড়েছে। এতে শিল্প উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যয় বাড়ছে। আর মূল্যস্ফীতির চাপে সীমিত আয়ের মানুষ ধুঁকছে। ঋণের সুদ হার বাড়িয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা এখন পর্যন্ত কাজে আসেনি।

এজন্য নীতি বাস্তবায়নের দুর্বলতা দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

বাজেটের আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো দীর্ঘ সময় ধরে থাকছে। সুদহার, বিনিময় হার ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে যেসব নীতি নেওয়া হচ্ছে তা ব্যর্থ হচ্ছে। আর্থিক খাত আরও চাপে পড়েছে। খেলাপি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংক খাত তারল্য সংকট থেকে বের হতে পারেনি।’’

তবে অর্থনীতির অন্য সূচকের মধ্যে রেমিটেন্স, রাজস্ব ও রপ্তানি আয় ওঠানামার মধ্য দিয়ে এখন কিছুটা স্বস্তিকর জায়গায় পৌঁছেছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমায় বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্য ও আর্থিক হিসাবগুলোতে আগের মত খুবই অস্বস্তির জায়গা অনেকটা কমেছে। তবে এসবের বিপরীতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন হারে ধীরগতি বজায় রয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগ পরিস্থিতি নাজুক হয়ে গেছে।

মূল্যস্ফীতি, সুদ ও বিনিময়ে হারের চাপ

চার বছর পরে সুদহারের সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিনিময়ে হারে ক্রলিং পেগ চালু করায় বেড়েছে ডলারের দাম। এ দুই সিদ্ধান্তে ব্যবসার খরচ অনেক বাড়ার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

বড় ধরনের নীতি পরিবর্তনের কয়েকটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় চাপে থাকা অর্থনীতিতে আরেকটু চাপ বাড়ছে বলে মনে করে বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনোমিস্ট জাহিদ হোসেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ‘‘অর্থনীতি যে ঘুড়ে দাঁড়ানোর কথা ছিল তা এখনও দেখা যাচ্ছে না। সুদহার তুলে দিয়ে সার্কুলার দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার ব্যবসায়ীদের গভর্নর বলেছেন, ১৪ শতাংশের মধ্যে সুদহার থাকবে। তাহলে তো দুই ধরনের বার্তা গেল অর্থনীতিতে।

‘‘কাগজে কলমে নীতি থাকার পরও তাতে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। তাহলে ব্যবসায়িক সুরক্ষাটা কোথায় থাকলে-থাকল না। ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি নেওয়ার সক্ষমতা থাকল না। এভাবে নীতি বিরোধী বক্তব্য দিলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না।’’

>> মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে রয়েছে গত দুই বছর ধরে।

>> গত বছরের অগাস্টে তা সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ উঠেছিল।

>> সবশেষ হালনাগাদ তথ্যে মে মাস শেষে তা আবার বেড়ে৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির এমন পরিস্থিতিতে তা নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকিতে মন্ত্রণালয়গুলোকে কার্যকর করার পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পণ্য সরবরাহ বাড়াতে হবে। এটি যদি না হয়, তাহলে যতোই বলা হোক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে, তা হবে না।’’

তিনি বলেন, ‘‘দোকানে তো পণ্য আছে। এর মানে সরবরাহের দিকটায় খুব সমস্যা নেই, কিন্তু দাম বাড়ছে। ভোক্তা অধিকার দিয়ে বাজার তদারকিতে সাফল্য আসবে না। খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে নামতে হবে।’’

আমদানিতে ভোগ্যপণ্যের শুল্ক কমিয়ে আনলে দাম সহনীয় হবে মন্তব্য করে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘‘পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ তেমন কোনো প্রণোদনা পায় না। কৃষি খাত হিসেবে তাদের প্রণোদনা বাড়াতে হবে। এজন্য আইএমএফের কথায় সারে ও কৃষি খাতে ভর্তুকি কমানো যাবে না, এখানে যৌক্তিক হারে দিতে হবে।’’

তিন সূচকে স্বস্তি

>> চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল-১০ মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, আয় এসেছে ৪৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।

>> আগের অর্থবছরের এ সময়ে যা ছিল ৪৫ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।

>> জুলাই-এপ্রিল সময়ে রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ, এসেছে ১৯ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার।

>> আগের অর্থবছরের এ সময়ে এসেছিল ১৭ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

>> এ সময়ে রাজস্ব আহরণ ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা; গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল দুই লাখ ৫০ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘অর্থনীতির রেমিটেন্স, রপ্তানি ও রাজস্ব আদায় সূচক কিছুটা স্বস্তিতে আছে। অন্য কোনো সূচকে ভালো অবস্থানে নেই। তবে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বাড়ানো যেত। এজন্য সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত লাগবে।’’

সালেহউদ্দিন আহমেদের পরামর্শ বৈধ পথে কেন রেমিটেন্স আসছে তা জরুরিভিত্তিতে সরকারকে দেখতে হবে। এটা দেশ থেকে টাকা পাচারের মাধ্যম হয়ে যাচ্ছে।

রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘কর-জিডিপি অনুপাত আমাদের এখনো ৭ দশমিক ৬ শতাংশের ঘরে। কর ছাড় ও কর সুবিধা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। কিছু খাতে কর ছাড় যৌক্তিক পর্যায় নামিয়ে আনতে হবে।’’

কর ফাঁকিবাজদের ধরার তাগাদা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এনবিআরের বর্তমান কাঠামোতে শুধু লক্ষ্যমাত্রা দিলে হবে না। তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।”

কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হয়রানিমুক্ত পরিবেশ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে এনবিআরকে আরও শক্তিশালী করার পরামর্শ তার।

বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে, ঋণ শোধের চাপ আর্থিক হিসাবে

>> জুলাই-মার্চে আমদানি হয়েছে ৪২ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার, কমেছে ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ।

>> আগের অর্থবছরের এ সময়ে তা ছিল ৫৮ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।

গত দুই বছর ধরে আমদানি নিয়ন্ত্রণ নীতির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি ধীরে ধীরে কমছে।

>> জুলাই-মার্চে বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ৯ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার বা ৬৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

>> আগের অর্থবছরের এ সময়ে যা ছিল ১৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।

এর সঙ্গে রেমিটেন্সে প্রবাহ ইতিবাচক হওয়ায় ঋণাত্বক থেকে এ অর্থবছরে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে আন্তর্জাতিক লেনদেনের চলতি হিসাব।

>> জুলাই-মার্চে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত ৫ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার।

>> আগের অর্থবছরের এ সময়ে ঘাটতি ছিল তিন দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার।

তবে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক হিসাবের ঘাটতি বেড়েছে আগের চেয়ে।

>> জুলাই-মার্চে এ হিসাবে ঘাটতি ৯ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের এ সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার বা ২১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি।

এমন প্রেক্ষাপটে বিদেশি ঋণ যথাসম্ভব কমিয়ে আনার পরামর্শ দিয়ে সিপিডির ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘‘সামনের দিনে বৈদেশিক দায় পরিশোধের বড় চাপ আসছে। আর্থিক হিসাব এখনও ঘাটতিতে থাকায় বিদেশি ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে। নইলে টাকার মানের উপর আরও চাপ বাড়বে।’’

সুখবর নেই বিদেশি বিনিয়োগেও

>> গত ৯ মাসে মোট এফডিআই (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ) ছিল ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

>> আগের অর্থবছরের এ সময়ে যা ছিল ৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার, শতকরা হারে কমেছে ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বেশি বিনিয়োগ যখন দরকার তখন তা কমে যাওয়ার জন্য অর্থনীতির নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তে দ্রুত পরিবর্তন ও জ্বালানি সমস্যাকে দায়ী করেছেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘‘প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম বছরে ৭-৮ বিলিয়ন ডলার পায়। ভারতেও গত বছরে বিদেশি বিনিয়োগ এখন লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে।’’

বাংলাদেশ কেন পায় না সে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘‘শুধু বললে তো হবে না, বিনিয়োগ পরিবেশ ভালো হতে হবে। তারা জ্বালানি ও পরিবেশের নিশ্চয়তা চাইবে।

“সুদহার ও ডলার নিয়ে ঘনঘন নীতি বদলালে তারা তো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। এতে দেশের ক্রেডিট রেটিংস পড়ে যায়। তারা তো ক্রেডিট রেটিংস দেখবে, অর্থ নিয়ে যেতে পারবে কি, না তা দেখবে। এসব জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’’

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ” গত দুই বছর ধরে তো দুটি যুদ্ধ চলছে বিশ্বে, ইউক্রেন-রাশিয়ার পরে ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের। রিজার্ভ একটু সংকটে থাকায় আমদানি তো ব্যবসায়ীরা যা চাচ্ছে তা করতে পারছে না। নতুন বিনিয়োগ চাইলেও বেশির ভাগ করতে পারেনি।

”কারখানার বর্তমান সক্ষমতাই ব্যবহার করা যাচ্ছে না, সেখানে নতুন বিনিয়োগ তো হবে না। আমরা আশা করছি সমস্যা কেটে যাবে। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে, তারাও খোঁজখবর রাখছে। রিজার্ভ একটু বাড়লে তখন সবই হবে। রিজার্ভ বাড়াতে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আরও আনতে হবে। রপ্তানি বৈচিত্রমুখী করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এখানেও ভালো কিছু হবে।”

বাড়ছে বিদেশি ঋণ, সুদ পরিশোধ

>> গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১০০ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। পরের চার মাসে তা আরও বেড়েছে।

>> মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ।

>> এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ১৪ শতাংশ।

>> ২০২-২৩ অর্থবছরের এ সময়ে পরিশোধ ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।

রিজার্ভের পতন থামছে না

>> গত ২৭ মে রিজার্ভ বিপিএম৬ পদ্ধতিতে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার।

>> বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে তা ২৪ বিলিয়ন ডলার।

>> এক বছর আগে গ্রস হিসাবে ছিল ৩০ বিলিয়ন ডলার।

>> বিপিএম৬ হিসাবে ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলার।

>> গত ২১ মে বিনিময় হার ছিল প্রতি ডলার ১১৭ টাকা।

>> এক বছর আগে এ দিনে ছিল ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা।

>> এক বছরের ব্যবধানে টাকার মান পড়েছে ৯ টাকা ২৭ পয়সা বা ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

>> গত ১৭ ডিসেম্বর ডলারের দর ছিল ১১০ টাকা।

>> গত ৮ মে বিনিময় দর বাজারভিত্তিক করতে ‘ক্রলিং পেগ’ চালু হলে ডলারের দর হয় ১১৭ টাকা।

>> একদিনে টাকার মান কমে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ বা ৭ টাকা।

ডলার ও রিজার্ভে টান পড়ার প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘বছর খানেকের বেশি সময় ধরে রিজার্ভ পতন বেশি হচ্ছে। এটি অর্থনীতির জন্য ভালো কোনো বার্তা দেয় না। আমরা যে সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছি তা বাস্তবসম্মত হচ্ছে না।’’

ব্যবস্থাপনার কারণে রিজার্ভ দুর্বল হচ্ছে মন্তব্য করে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই তো কত নীতিমালা নেওয়ার কথা শুনলাম। যদি দুর্বল না হত, তাহলে তো রিজার্ভ বাড়ত। কই তা তো বাড়লো না।’’

গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে সামষ্টিক অর্থনীতি খুব চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে রিজার্ভ পরিস্থিতি কাঙ্খিত জায়গায় না থাকায়। গত কয়েক বছর ধরে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও রিজার্ভ পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়নি। এখানে উন্নতি না হলে টাকার মান ধরে রাখা সম্ভব না, মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।’’

এডিপি বাস্তবায়নে সেই পুরনো চিত্র

>> গত এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৯ দশমিক ২৬ শতাংশ।

>> টাকার অঙ্কে খরচ হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা।

>> বাস্তবায়নের এ হার গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

>> আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৫০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

বাস্তবায়ন সক্ষমতা ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ছে মন্তব্য করে সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন বলেন, ‘‘এত দুর্বল হচ্ছে যে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দক্ষতার অভাব তো আছে, সঙ্গে আছে নৈতিকতা ও স্বচ্ছতার অভাব। পাঁচ টাকার জিনিস ১০ টাকা দিয়ে কিনছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না, তাও তো জানা যাচ্ছে না।’’

জিডিপি ৫০ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে

>> বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চলতি অর্থবছরের সাত মাস শেষের সাময়িক হিসাবে চলতি মূল্যে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বেড়ে ৫০ লাখ ৪৮ হাজার ২৭ কোটি টাকা হওয়ার প্রাক্কলন করেছে।

> বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রধান বিদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৪৫৯ বিলিয়ন ডলার।

>> গত ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে জিডিপির আকার ছিল ৪৪ লাখ ৯০ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা।

> বৈদেশিক মুদ্রায় তা ছিল ৪৫২ বিলিয়ন ডলার।

>> চলতি অর্থবছরের সাত মাসে স্থির মূল্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হয়েছে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ।

>> গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে চূড়ান্ত হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছিল।

সরকারের ব্যাংক ঋণও বেড়েছে

>> গত মার্চ পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

>> ঋণ স্থিতি ১৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা।

>> চলতি অর্থবছরের শেষার্ধে মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ শতাংশ।

>> গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের ব্যাংক ঋণ ২৪ হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা।

>> গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নিট ঋণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়।

>> ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ স্থিতি সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

>> ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট ঋণ স্থিতি ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা।

>> খেলাপি এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা বা ৯ শতাংশই; ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটের মধ্যে সরকারি ঋণ আরও বাড়লে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা দূরহ হবে বলে মনে করছেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। বলেন, ‘‘খেলাপিদের ছাড় দিয়ে কখনই লাভ হয়নি। দুষ্টু ব্যবসায়ীদের ছাড় দিয়ে দুর্বল হচ্ছে ব্যাংক খাত।’’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটের সঙ্গে ইমেজ সংকট বাড়ছে। এটি ঠিক না হলে সরকারের ঋণ নেওয়ার জায়গাও সংকুচিত হবে।

সঞ্চয়পত্র ভাঙছে বেশি

>> বাজেটে চলতি অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার কোটি টাকা।

>> গত মার্চ পর্যন্ত বিক্রির চেয়ে গ্রাহক ভেঙেছে ১২ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা।

>> মার্চ শেষে স্থিতি ছিল তিন লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা।

পুুঁজিবাজার উন্নয়নে সিএসই’র স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তাবনা

0

পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন ও গুণগত সম্প্রসারণে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী কিছু প্রস্তাবণা উপস্থাপন করেছে।

রবিববার (২ জুন) সিএসই’র চট্টগ্রাম কার্যালয়ে প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম এসব প্রস্তাবণা তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিএসইর পরিচালক এমদাদুল ইসলাম, পরিচালক মোহাম্মদ নাকিব উদ্দিন খান, পরিচালক মোহাম্মদ আক্তার পারভেজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সিএসই’র চেয়ারম্যান বলেন, একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বাজার কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারের গুণগত সম্প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ কৌশল নির্ধারণ করে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আসিফ ইব্রাহিম বলেন, আগামী ৬ জুন অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য বাজেট উপস্থাপন করবেন। আমরা আশা করি চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জসমূহ বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় তার সুযোগ্য অর্থমন্ত্রী একটি টেকসই ও গতিশীল বাজেট উপস্থাপন করবেন। একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বাজার কাঠামো তৈরি করার ক্ষেত্রে শেয়ারবাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জাতীয় বাজেট দেশের জন্য শুধুমাত্র একটি বাৎসরিক আয় ব্যয়ের হিসাব নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত দিক নির্দেশনাও বটে। বর্তমান সরকারের কৌশলগত উন্নয়ন পরিকল্পনায় বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিতকরণ এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত রাষ্ট্রে উন্নিতকরণের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তার সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য একটি যথোপযুক্ত অর্থ বাজার কাঠামো তৈরি করা খুবই গুরুত্বপুর্ণ। একটি টেকসই বাজার কাঠামোর জন্য অর্থবাজার, শেয়ারবাজার এবং অন্যন্ন প্রাসঙ্গিক কাঠামোর একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমাদের আর্থিক বাজার কাঠামো কার্যত অনেকাংশে ব্যাংক ব্যবস্থা তথা অর্থ বাজারের উপর নির্ভরশীল। যার বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে ইতিমধ্যে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই আগামী বছরের জাতীয় বাজেটে শেয়ারবাজারের গুণগত সম্প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ কৌশল নির্ধারণ করে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

শেয়ারবাজার উন্নয়ন কৌশলপত্রে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণে সিএসইর প্রস্তাবণা হলো-

তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ

বর্তমানে ৩৪৯টি কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আছে। স্থিতিশীল শেয়ারবাজারের জন্য গুণগত মান সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই সংখ্যা একটি সন্তোষজনক সংখ্যায় উন্নীতকরন করা প্রয়োজন।

কার্যকর কর্পোরেট বন্ড মার্কেট চালুকরণ

দেশে ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের লক্ষ্যে একটি স্থিতিশীল শক্তিশালী বন্ড মার্কেট অতীব জরুরি। একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট গঠন ও নতুন বন্ডের তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে পণ্যের বৈচিত্রতা আনয়নের নিমিত্তে বন্ড হতে উদ্ভুত আয়কে কর অব্যহতি প্রদান করা প্রয়োজন।

মার্কেট ক্যাপ জিডিপি রেশিও বৃদ্ধিকরণ

বাংলাদেশের অর্থনীতি সমসাময়িক দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মার্কেট ক্যাপ জিডিপি রেশিও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্থানীয় এবং বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার একটি প্যারামিটার হিসেবে বিবেচিত হয়।

শেয়ারবাজারের জন্য বাজার মধ্যস্থতাকারী ও বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ: বর্তমানে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে দক্ষ বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের সংকট রয়েছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যহারে কম। এই সংখ্যা একটি কাঙ্খিত স্তরে উন্নিত করা প্রয়োজন।

শেয়ারবাজারে পণ্য বৈচিত্র্যকরণ

বর্তমান শেয়ারবাজার শুধুমাত্র ইকুইটি মার্কেটনির্ভর। যার ফলে বাজারে যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়, তেমনি এটি শেয়ারবাজার সম্প্রসারণের অন্তরায়। এই লক্ষ্যে কার্যকর কৌশলের মাধ্যমে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন।

এসব লক্ষ্য সমূহ স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে বাস্তবায়ন করা গেলে একটি কার্যকর শেয়ারবাজার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে বলে মনে করে সিএসই।

সুপার ‍ওভার রোমাঞ্চে নামিবিয়ার জয়

0

আজ সোমবার (৩ জুন) ব্রিজটাউনে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১০৯ রান সংগ্রহ করে ওমান। জবাবে পুরো ওভার খেলে ৬ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান তুলে নামিবিয়া। সুপার ওভারে নামিবিয়ার জয়ের নায়ক ডেভিড ভিসা। ৩৯ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ব্যাট হাতে ৪ বলে তোলেন ১৩ রান। আর বল হাতে আটকে দেন ওমানের ব্যাটারদের।

১১০ রান তাড়ায় নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নামিবিয়ার। এক রানের মাথায় মিচেলের উইকেট হারায় দলটি। জ্যান ফ্রাইলিঙ্ককে নিয়ে সেই চাপ সামাল দেন নিকোলাস ডেবিন। এই জুটিতে যোগ হয় ৪১ রান। দলীয় ৪২ রানের মাথায় নিকোলাসের বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেট হারায় নামিবিয়া।

এরপর ৭৩ রানে অধিনায়ক এরাসমাসের বিদায়ের পর দ্রুত কয়েকটি উইকেট পড়লে পথ হারাতে শুরু করে তারা। শুরু থেকে প্রান্ত আগলে খেলতে থাকা জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক ৪৫ রানে ফিরলে পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়ায় আরও ভীতিকর। পরবর্তীতে আঁটসাঁট বোলিংয়ে নামিবিয়াকে চেপে ধরে ওমান।

যদিও শেষদিকে ডেভিড ভিসার লড়াইয়ে কোনো রকমে টাই করে ম্যাচটা সুপার ওভারে নিয়ে যায় নামিবিয়া। অবস্থা এমন ছিল শেষ বলে প্রয়োজন দুই রান। স্নায়ুর চাপে তখন দুই দল। মেহরান খানের ডেলিভারিটি ব্যাটে লাগাতে পারেননি ভিসা। বল কিপারের কাছে গেলেও তিনি বলটা গ্লাভসে জমাতে পারেননি। তখন কোনো দিক না তাকিয়ে টাই করার জন্য রান নিতে ছুটেন দুই নামিবিয়ান ব্যাটার। ওমান কিপার তখন স্টাম্প ভাঙার মতো বীরত্বও দেখাতে পারেননি।

এর আগে, টস জিতে বোলিংয়ে নেমে স্বপ্নের মতো শুরু পায় নামিবিয়া। প্রথম দুই বলেই উইকেট পান রুবেন ট্রাম্পেলম্যান। দুই বলে দুই উইকেট নেওয়ার পর ওই ওভারে তিন রান দেন ট্রাম্পেলম্যান। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে আবার উইকেটের দেখা পান তিনি। এবার ফেরান ৬ বলে ৬ রান করা নাসিম খুশিকে। এবার অবশ্য মিড অফে ক্যাচ দেন নাসিম। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১০৯ রানে থামে ওমান।

বেনজীরের বিচার চলবে : ওবায়দুল কাদের

0

বিদেশে থাকলেও দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিচার চলবে, বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের , দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার কোনো ছাড় দেবে না।

আজ রোববার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তদন্ত, মামলা, গ্রেপ্তার সবকিছু একটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সরকার এখানে দুদককে এড়িয়ে আগ বাড়িয়ে কেন ব্যবস্থা নেবে? সরকারের দুর্নীতিবিরোধী যেসব সংস্থা আছে তাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে তারও বিচার হবে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশে ১৯৭৫ পরবর্তীকালে কোনো শাসক ও সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার সেটা দেখিয়েছে। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারে। দুর্নীতি করার পর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কী সেটা দেখতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

সরকারের সহায়তায় বেনজীর আহমেদ বিদেশে পালিয়েছে- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সরকারের কারা গিয়ে তাকে বিমানে তুলে দিয়েছে? কোন অথরিটি গিয়ে তাকে তুলে দিয়েছে? অন্ধকারে ঢিল ছুড়বেন না।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশ থেকে টাকা পাচারের সংস্কৃতি ও অর্থনীতি শুরু হয়েছে বিএনপির আমল থেকে। তারা ক্ষমতায় আসলে বিএনপি নেতারা অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের মহোৎসবে মেতে ওঠে। এটা দেশে ও বিদেশে প্রতিষ্ঠিত সত্য। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিএনপির দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক রহমান বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুর্নীতি কোন দেশে হয় না, এই দাবি কেউ করতে পারে না। আমাদের দেশে যিনি প্রধানমন্ত্রী, সরকার প্রধান, তিনি কোনো প্রকার দুর্নীতি করেন বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে কেউ দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা আপাদমস্তক সৎ রাজনীতিক- এটা বিশ্বে স্বীকৃত। তার জনপ্রিয়তার মূলে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম ও সৎ জীবনযাপন করেন।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির প্রধান নেতাই দণ্ডিত, পলাতক তারেক রহমান চিহ্নিত অপরাধী। এমন লোক যে দলে নেতৃত্ব দেয় সেই দল জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জনগণের বিশ্বাসও রাখতে পারে না। তারা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরপর পাঁচবার তারা দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেই বিএনপি’র গঠনতন্ত্র থেকে হঠাৎ করেই ৭ ধারা বাদ দিয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

উন্নয়নে যারা পাশে, তাদের সঙ্গেই বাংলাদেশ চলবে: শেখ হাসিনা

0

যুদ্ধকে এড়িয়ে শান্তি বজায় রাখার বার্তা নিয়ে উন্নয়নে সহযোগিতা করবে এমন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ” কার দেশের সঙ্গে কার দেশের ঝগড়া সেটা আমার দেখার দরকার নেই। নিজের দেশের উন্নয়নটা আমার আগে দরকার। উন্নয়নে যারা সহযোগিতা করবে আমি তাদের নিয়েই চলব। সেভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

“আমরা সবসময় শান্তি চাই, যুদ্ধ চাই না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই এবং সেই বন্ধুত্ব রেখেই কিন্তু আমি এগিয়ে যাচ্ছি।”

রবিবার গণভবনে ‘আমার চোখে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এক মিনিটের ভিডিও নির্মাণ প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন শেখ হাসিনা।

দেশের উন্নয়নযাত্রা অব্যাহত রাখতে সবাইকে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি, এই বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। ১৫ অগাস্টের পর আমাদের যেভাবে ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করেছে, আর যেন এটা না করতে পারে সেটা দেখতে হবে।”

বক্তব্যে নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “এখন যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ, বিজ্ঞানের যুগ ও জ্ঞানের যুগ। আমাদের ছেলেমেয়েদের বলব লেখাপড়া ছাড়া, জ্ঞান অর্জন ছাড়া, নিজেকেও তৈরি করতে পারব না, দেশকেও তৈরি করতে পারব না।

“আমাদের ছোট্ট সোনামনি, আমাদের নতুন প্রজন্ম তোমরাই একদিন এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু সেটা করতে হলে একটা আদর্শ লাগে। ইতিহাস থেকে শিখতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগামী দিনের পথ চলা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, আমরা যেন আরও সুন্দরভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সেভাবেই কিন্তু নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। ”

বাংলাদেশ কারো কাছে হাত পেতে নয়, আত্মমর্যাদা নিয়ে চলবে– সেই প্রত্যয় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “এই বোধটাই আমাদের মাথায় সবসময় রাখতে হবে। একটা কথা মনে রাখবে যে ভিক্ষুক জাতির কোন ইজ্জত থাকে না। ১৯৭৫ সালের আমরা কিন্তু ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত হয়েছিলাম।”

সঠিক ইতিহাস জানার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল, আজকে সেই ইতিহাস বিকৃতি আস্তে আস্তে মুছে গেছে। এখন সঠিক তথ্যটা চলে এসেছে।”

শেয়ারবাজার ছাড়লো আরও সাড়ে ১৫ হাজার বিনিয়োগকারী

0

দীর্ঘদিন যবাত দেশের শেয়ারবাজার পতনের বৃত্তে আটকে আছে। কিছুতেই বাজারে স্থিরতা আসছে না। একদিন সামনে এগুলে দুদিন পেছায়। যা কারণে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে না। শেয়ারবাজারে গতি না ফেরায় প্রতি মাসেই বিনিয়োগকারীরা বাজার ছাড়ছেন। বিপরীতে নতুন করে বাজারে বিনিয়োগকারীরা আসছেনও। তবে ছাড়ার তুলনায় আসার সংখ্যা কম।

মে মাসজুড়ে চলা পতনের কারণে মাত্র ১৯ কার্যদিবসে শেয়ারবাজার ছেড়েছেন প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার বিনিয়োগকারী। তার বিপরীতে পুরো মাসে শেয়ারবাজারে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ৮ হাজার বিনিয়োগকারী। ফলে যত বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন, তার প্রায় অর্ধেক বিনিয়োগকারী নতুন করে বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খুলে বাজারে যুক্ত হয়েছেন।

শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শেয়ার ধারণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএলের তথ্য থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ এপ্রিল শেয়ারবাজারে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫টি। আর মাসের শেষ কার্যদিবসে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৮টিতে। অর্থাৎ মে মাসজুড়ে ১৫ হাজার ৪৯৩ জন বিনিয়োগকারী তাদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন।

শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কমেছে শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা। মে মাসের শেষ কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে সক্রিয় তথা শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার ৩২৯টিতে। অথচ এপ্রিলের শেষ দিনে শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩৯টি। শেয়ারবাজারে যেসব বিও হিসাবে শেয়ার থাকে, সেগুলোকেই মূলত সক্রিয় বিও হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে সব মিলিয়ে ডিএসইর প্রধান সূচকটি ৩৩৩ পয়েন্ট বা সাড়ে ৬ শতাংশ কমেছে। মে মাসের শুরুতে ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল ৫ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টের অবস্থানে। গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটি কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২৫২ পয়েন্টে। এ কারণেই বেড়েছে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে শেয়ারবাজার ছেড়ে যাওয়া বিনিয়োগকারীর সংখ্যা। সিডিবিএলের হিসাবে, গত এপ্রিলেও প্রায় ১৬ হাজার বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজার ছেড়ে গিয়েছিলেন। সেই হিসাবে গত দুই মাসে প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন।

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু: ঈদযাত্রা

0

আগামী ১৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ধরে আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ রোববার (২ জুন) সকাল ৮টায় পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরুর মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ বছরের ঈদুল আজহার অগ্রিম টিকিট বিক্রি। গতবারের মতো এবারও ঈদের টিকিট পুরোপুরি অনলাইনে বিক্রি হবে।

আজ ২ জুন দেওয়া হচ্ছে ১২ জুনের টিকিট। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, এবার ঢাকা থেকে বহির্গামী ট্রেনের মোট আসন ৩৩ হাজার ৫০০টি।

পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করার সব আন্তনগর ট্রেনের আসনের টিকিট বিক্রি সকাল ৮টায় শুরু হলেও পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা সব ট্রেনের আসনের টিকিট দুপুর ২টায় বিক্রি করা হবে।

রেলওয়ের কর্মপরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়, ১৩ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৩ জুন; ১৪ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৪ জুন; ১৫ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৫ জুন; ১৬ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৬ জুন।

একইভাবে ১০ থেকে ১৪ জুন ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। ২০ জুনের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হবে ১০ জুন, ২১ জুনের টিকিট দেওয়া হবে ১১ জুন, ২২ জুনের টিকিট দেওয়া হবে ১২ জুন, ২৩ জুনের টিকিট দেওয়া হবে ১৩ জুন এবং ২৪ জুনের টিকিট দেওয়া হবে ১৪ জুন।

ইউরোপের রাজা রিয়াল মাদ্রিদ

0

ইউরোপের সত্যিকারের রাজা রিয়াল মাদ্রিদ —এই কথাটি বললে ভুল হবে না মনে হয়! আসলে ভুল হওয়ার কোনো সুযোগই যে রাখেনি স্প্যানিশ ক্লাবটি। একবার নয়, দুবার নয় কিংবা ১০বার নয়, রেকর্ড ১৫তমবার ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় নিজেদের সেরা প্রমাণের মিশনে সফল রিয়াল মাদ্রিদ। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজা কার্লো আনচেলত্তির দল।

লন্ডনের ওয়েম্বলিতে শনিবার (১) মে দিবাগত রাত একটায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে জার্মান ক্লাবটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। শেষ ২০২২ সালে শিরোপা জেতা দলটি গেল আসলে ফাইনালে না উঠতে পারায় আক্ষেপ জমেছিল। এবার শিরোপা উদ্ধার করে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে ছাপিয়ে গেল নিজেদেরকেই।

ফাইনাল মহারণে জয়ের নায়ক দানি কারবাহাল ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র। বিরতির পর দুজনের গোলেই শিরোপা উৎসব করে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

ধারে-ভারে রিয়াল থেকে যোজন-যোজন পিছিয়ে ডর্টমুন্ড। শেষ ১০ বছর আগে এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলেছিল তারা। ফলে ওয়েম্বলির ফাইনালে নিশ্চিত ফেভারিটই ছিল রিয়াল। কিন্তু প্রথমার্ধের খেলা দেখলে ভুল প্রমাণ হতেন যে কেউই। রিয়াল নয় বরং বিরতির আগ পর্যন্ত রিয়ালের বুকে কাঁপন ধরিয়েছিল জার্মান ক্লাবটি।

অথচ শেষ মুহূর্তে পাশার দান পাল্টে দিয়েছেন ভিনিসিয়াস ও কারবাহাল। দুই তারকার গোলে কাঁদল ডর্টমুন্ড। ম্যাচটিতে আক্রমণে সমানে-সমান পাল্লা দিয়েও রিয়ালের রক্ষণ ভাঙতে পারেনি ডর্টমুন্ড। ম্যাচের ৪২ ভাগ সময় বল দখলে রেখে ১২বার আক্রমণে যায় জার্মান ক্লাবটি। যার মধ্যে চারবার অনটার্গেট শট নিয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি একটিও। অন্যদিকে ১৩ বার আক্রমণে গিয়ে দুটিতে সফল রিয়াল মাদ্রিদ।

তবে প্রথমার্ধ জুড়ে চাপে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ডর্টমুন্ডের আক্রমণে প্রথমার্ধে কোণঠাসা ছিল রিয়াল। তবে, বেশকিছু সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে না পেরে অস্বস্তিতে ছিল জার্মান ক্লাবটি। ম্যাচের ১৩ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগটি পায় তারা। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে নিকলাস ফুলক্রুগের ব্যাকপাস রিসিভ করেন  ডর্টমুন্ডের হুলিয়ান ব্রান্ট। এরপর বল নিয়ে ভেতরে ঢুকলেও পারেননি লক্ষ্যভেদ করতে। ব্রান্ট দূর্বল শট নিলে সেই যাত্রায় বেঁচে যায় রিয়াল মাদ্রিদ।

সাত মিনিট পর আবারও ডর্টমুন্ডের সুযোগ। কিন্তু, এবারও মিস! রিয়ালের গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াকে একা পেয়েও লিড আনতে পারেননি করিম আদেয়েমি। এরপর ২৩তম মিনিটে ফুলক্রুগের পা ছোঁয়া শট গোলবার থেকে ফিরে আসলে আবারও গোলহীন থাকে জার্মান ক্লাবটি।

বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে আরেকবার আক্রমণে যায় ডর্টমুন্ড। এবার মার্সেল সাবিটজারের দূর পাল্লার শট ঠেকিয়ে রিয়ালকে রক্ষা করেন কোর্তয়া। ফলে গোলহীন থেকেই বিরতিতে যেতে হয় জার্মান ক্লাবটিকে।

বিরতি থেকে ফিরেই অবশ্য দৃশপট বদলে দেয় রিয়াল। যথারীতি ধারণ করে বিধ্বংসী চেহারা! মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই দুইবার ডর্টমুন্ডের জালে বল পাঠিয়ে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। বনে যায় রাজা।

প্রথম গোলটি আসে ৭৪তম মিনিটে। ক্লাব ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা টনি ক্রুসের কর্নার থেকে বাড়ানো বলে মাথা ছুঁইয়ে লিড এনে দেন দানি কারবাহাল।

এর ৯ মিনিট পর আবারও রিয়ালের উৎসব। এবার উৎসবের উপলক্ষ্যটা এনে দেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ২০২২ সালের ফাইনালের গোলদাতা এবারও নাম তুললেন স্কোরশিটে। ৮৩ মিনিটের মাথায় জুড বেলিংহামের পাস থেকে সহজ প্লেসিং শটে স্কোরলাইন ২-০ করেন ভিনি। সঙ্গে সঙ্গে উৎসবে ফেটে পড়ে রিয়াল। আর হলুদে জার্মানিরা পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। ম্যাচের বাকি সময় শুধুই অপেক্ষা। নির্ধারিত সময় ও ইনজুরি সময় পেরিয়ে অবশেষে এলো উৎসবের ক্ষণ! যে উৎসব শুধুই ইউরোপের সত্যিকারের রাজাদের!