এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের পুলিশ।
এ অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাতে (১ জুন মে) বাবাকে নিয়ে আবেগঘন একটি পোস্ট দেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
বাবাকে নিয়ে ডরিন তার পোস্টে লিখেছেন, ‘তুমি কোথায় চলে গেলে আব্বু আমার, এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।’এরআগে ২৯ মে’র একটি পোস্টে বাবাকে ভীষণভাবে মিস করার তথ্য জানান ডরিন। তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘আব্বু তোমার কথা অনেক মনে পড়ে। জানো আব্বু সবাই আমাকে এখন বলে এতিম মেয়েটার বাবা নাই। আমার জানো তখন অনেক কষ্ট হয় বুকটা ফেটে যায়।’
পুলিশের তথ্যানুযায়ী, আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহিন। ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহিদুজ্জামান সেলিমের ভাই তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শাহিন কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের ৫৬বিইউ ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়ার কথা স্বীকার করলেও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ রয়েছে ওই ফ্ল্যাটেই হত্যা করা হয় আনারকে।
তবে অভিযুক্ত শাহিনের দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই জড়িত নন। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তাই তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজিম।
বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পরে, গত ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। বুধবার হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় বহুতল সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।
ঢাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে প্রাণ গেছে প্রায় তিনশ বড় আকারের গাছের। এসব গাছের বেশিরভাগই ছিল বিভিন্ন সড়কের মিডিয়ান, ফুটপাত, সড়কদ্বীপে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘরের গাছও ভেঙেছে ওই ঝড়ে।
দুই সিটি করপোরেশনের হিসাবে, ঢাকার উত্তরে ২০০টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ভেঙে পড়া গাছের সংখ্যা ৯৪টি। এই তালিকায় ছোট, গুল্ম বা লতাজাতীয় গাছ আসেনি।
গত রবি ও সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমালে রাজধানীতে যে পরিমাণ গাছ ভেঙেছে, নিকট অতীতে কোনো ঝড়ে এত বেশি গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা।
এজন্য তারা গাছ লাগানোয় পরিকল্পনার অভাব, গাছের নিয়মিত পরিচর্যার অভাবকে দায়ী করছেন।
ঢাকায় কত গাছ আছে, তার কোনো সঠিক হিসাব পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি শহরের আয়তনের ২৫ শতাংশে গাছ থাকতে হয়। ঢাকায় আছে মাত্র ২-৪ শতাংশ।
রাজধানীতে সবুজের পরিমাণ বাড়াতে আরও আলাদা কর্মসূচির আওতায় শহরে তিন লাখ বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। ডিএনসিসির পরিকল্পনায় থাকা দুই লাখ গাছের মধ্যে এরইমধ্যে ৮৫ হাজার ৮৪৫টি গাছ লাগানো হয়েছে। আর ডিএসসিসি এক লাখের মধ্যে ২৫ হাজার গাছ লাগিয়েছে।
গাছ ভাঙল কেন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গাছ না লাগানো, গাছের শেকড় ছড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা না থাকা, উন্নয়নকাজের সময় গাছের শিকড় কেটে ফেলা, জরাগ্রস্ত গাছ অপসারণ না করাসহ বিভিন্ন কারণে এবার গাছ ভেঙেছে বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের মতে, বৃক্ষরোপণের আগে-পরে তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। গাছের প্রজাতি নির্বাচন, কোন জায়গায় গাছ কোন গাছ রোপণ করা হবে এবং বৃক্ষরোপণের পর সেগুলোর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট্কমকে বলেন, “যেসব গাছের চারা ঢাকায় রোপণ করা হচ্ছে সেগুলো পলিথিন বা টবে জন্মানো হয়। এতে প্রাথমিক মূলটা বাড়তে পারে না, জমাটবদ্ধ হয়ে যায়। ওই গাছ রোপণ করা হলেও মূল শিকড় হয় না।
“সেই চারা তুলে মাটিতে রোপণ করার পর মূল শিকড়টা মাটির গভীরে যেতে পারে না। যতগুলো গাছ পড়েছে, দেখবেন মাটির গভীরে কোনো মূল নাই। বীজ দিয়ে গাছ লাগালে সবচেয়ে ভালো। পলিথিনের চারা হলে মাটিটা বিশেষভাবে বড় গর্ত করে রোপন করা উচিত, যাতে শিকড়টা যেখানে বাড়বে সেখানে যেন পর্যাপ্ত জায়গা থাকে।”
এই উদ্ভিদবিদ বলেন, ঢাকায় গাছের মূল প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না পাওয়াও একটা বড় কারণ। বিভিন্ন সময় গাছের শিকড় কেটে ফেলা হয়।
“এমন জায়গায় গাছ লাগানো হচ্ছে যার চারপাশে কংক্রিট। সড়ক বিভাজক একেবারে সরু, গভীরতা কম, প্রশস্ততাও কম। সেখানে গাছ লাগানো হচ্ছে। একদিকে মাটি ঠিক নাই, কংক্রিটের কারণে সে বাড়তে পারছে না। ড্রেনেজ সিস্টেম, স্যুয়ারেজ লাইন, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেটসহ নানা ইউটিলিটি সার্ভিস বসাতে গিয়ে শিকড় কেটে ফেলা হয়েছে। শিকড় কাটার ফলে গাছগুলো ভারসাম্যহীন হয়ে যায়, বাতাসে ভেঙে পড়ে।”
পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ‘তরুপল্লবের’ সাধারণ সম্পাদক মোকারম হোসেন আরেকটি পর্যবেক্ষণ তুল ধরেছেন।
তার ভাষ্যে, ঢাকায় লাগানো বেশিরভাগ গাছই বিদেশি। বাংলাদেশের মাটির সঙ্গে এসব গাছের ভালো সংযোগ হয় না।
ঘূর্ণিঝড় রেমালে ভেঙে পড়া গাছ পর্যবেক্ষণ করে তিনি বলেন, “ভেঙে পড়া গাছের একটা বড় অংশ কৃষ্ণচূড়া। এই গাছের কাণ্ড, শিকড়, ডালপালা সবই নরম। আমার পর্যবেক্ষণে দেখেছি, রোববার ঢাকায় যত গাছ পড়েছে তার একটা বড় অংশ কৃষ্ণচুড়া। এই গাছ ফুটপাতে, সড়ক বিভাজকে লাগানো যাবে না।”
তিন লাখ গাছ সঠিক জায়গায়?
দুই সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনায় বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত, মিডিয়ান, বিভিন্ন পার্কে তিন লাখ গাছ লাগানো হবে। এছাড়া কিছু গাছ লাগানো হবে নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস আছে– এমন এলাকায়।
ডিএনসিসি জানিয়েছে, বড় গাছের মধ্যে কাঠবাদাম, ছাতিম, বকুল, সোনালু, জারুল, রসকাউ এবং শোভাবর্ধনকারী কাটামেহেদী, চায়না টগর এবং রঙ্গন থাকবে সড়কে। আর বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনায় দেশীয় গাছকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা জানিয়েছে ডিএসসিসি।
প্রকৃতিবিদ মোকারম হোসেন বলছেন, উত্তর সিটি করপোরেশন যে গাছ লাগাচ্ছে সে তালিকা দেখেছেন তিনি। তার মনে হয়েছে ছাতিম, কদম, কাঠবাদাম ফুটপাতের উপাযোগী নয়।
“ছাতিম গাছের ডায়া কত, ডালপালা কোথায় আসবে, কত উপরে থাকবে সেসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফুটপাতের ওপর বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় গাছের মাথা কেটে দিতে হবে। কদম গাছ এবং কাঠবাদামের ডাল নরম। ঝড় হলে এসব গাছ, গাছের ডাল ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে।”
তিনি বলেন, “এভিনিউ ট্রি হিসেবে দেবদারু, স্বর্ণচাঁপাসহ কিছু গাছ আছে যেগুলোর ডাল ভাঙে না। এসব গাছ ফুটপাতে লাগানো যায়। ডিএনসিসি উদ্ভিদ বিন্যাসের যে পরিকল্পনা করেছে, তা উদ্ভিদবিদদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে করা হয়নি বলে আমি মনে করি।”
আর ঢাকায় দেশীয় প্রজাতির গাছ না লাগিয়ে বিদেশি গাছের দিকে নগর কর্তৃপক্ষের ঝোঁকের খেসারত দিতে হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, “ঢাকা সাজাতে হবে ঢাকার আদি বৃক্ষ দিয়ে। বিদেশি বৃক্ষ দিয়ে নয়। কিন্তু আমরা বিদেশি বৃক্ষের প্রতি ঝুঁকছি। বৃক্ষরোপণ একটি বিজ্ঞান। এর বাইরে গিয়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে যদি আপনি গাছ লাগান তাহলে তা সাসটেইনেবল হবে না। ঢাকার গাছ নিয়ে এখন যা হচ্ছে তা হতেই থাকবে।”
তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, পারিপার্শ্বিক সবকিছু বিশ্লেষণ করেই ঢাকায় বৃক্ষরোপণ হয়। এরপরও ঝড়ের গতিবেগ বেশি থাকলে গাছ পড়ে যায়।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের কাজ করে যাব। আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে নেব কোন গাছ কতটা সহনীয়। আমরা আগামী সপ্তাহে একটি মিটিং করব বৃক্ষরোপণ বিষয়ে। সেখানে বিষয়টা তুলব। কোন গাছ ঝড়ে ভাঙবে না, কোন গাছ বেশি ছায়া দিতে পারে।”
গাছ নির্বাচনে ভুল হচ্ছে– পরিবেশবিদদের এমন মতামতের বিষয়ে তিনি বলেন, “উনারা উনাদের পরামর্শ আমাকে লিখিত আকারে দিতে পারেন। আগামী সপ্তাহে আমি একটা স্টেকহোল্ডারস মিটিং করছি। সেখানে সবার সঙ্গে কথা বলব, সম্মিলিতভাবে যেটা ঠিক হবে আমরা সেটাই লাগাব।”
অন্যদিকে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের দাবি করেছেন, ঝড়ে যেসব গাছ পড়েছে সেগুলো বেশিরভাগই ফুটপাতের নয়। বিভিন্ন বাড়িঘরের গাছ সড়কে, ফুটপাতে পড়েছে।
“শক্তপোক্ত গাছ, পর্যাপ্ত মাটি আছে, এমন জায়গা থেকে পড়েছে অনেক গাছ। আমাদের ধারণা বাতাসের তীব্র গতি এবং দীর্ঘ সময় ধরে চলা ঝড়ের কারণে গাছগুলো উপড়ে পড়তে পারে।”
“আমাদের নিজস্ব আরবরিকালচারিস্ট আছেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় গাছ লাগানোর সময় পরামর্শকদের পরামর্শ নেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনা আছে সড়কে ফুটপাতে দেশি গাছ লাগানোর। বিভিন্ন প্রকল্প এবং গণপরিসর মিলিয়ে এক লাখের বেশি গাছ লাগানো হবে। এরইমধ্যে ২৫ হাজার গাছ লাগানো হয়ে গেছে।”
ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে মৌখিক পরীক্ষা স্থগিতের আদেশ আটকে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বৃহস্পতিবার হাই কার্টের আদেশ স্থগিত করে দেন। এর ফলে মৌখিক পরীক্ষা নিতে আর কোনো বাধা থাকছে না বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আদালত আদেশে বলেছে, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে যে তদন্ত শুরু হয়েছে, তাও চলবে। এখন মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হলেও তদন্ত শেষ হওয়ার আগে তার ফল প্রকাশ করা যাবে না।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রামে গত ২৯ মার্চ লিখিত পরীক্ষা হয়। সংশোধিত ফলাফলে ৪৬ হাজার ১৯৯ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়।
কিন্তু তৃতীয় ধাপে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে অ্যাডভোকেট সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের এক রিট আবেদনে মঙ্গলবার মৌখিক পরীক্ষা ছয় মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট।
তৃতীয় ধাপের নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ জন। গত ২১ এপ্রিল প্রকাশিত ফলাফলে ২৩ হাজার ৫৭ জনকে প্রথমে উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছিল।
পরে জানা যায়, ফলাফলে মেঘনা ও যমুনা সেটের পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নে কারিগরি ভুল ছিল। যে কারণে পুনর্মূল্যায়ন করে রাতেই নতুন ফল প্রকাশ করে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ বলে জানানো হয়।
জাতিসংঘে আয়োজিত হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠান বর্জন করবে যুক্তরাষ্ট্র, জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।
দায়িত্বরত অবস্থায় কোনো রাষ্ট্রপ্রধান মারা গেলে ঐতিহ্যগতভাবে ১৯৩ সদস্যসের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মিলিত হয়। এ শ্রদ্ধাঞ্জলিতে রাইসিকে নিয়ে বক্তৃতা দেওয়া হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “আমরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবো না।”
এই শ্রদ্ধাঞ্জলি যুক্তরাষ্ট্র যে বর্জন করবে তা নিয়ে আগে কোনো খবর হয়নি। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের মিশনও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
১৯ মে ইরানের উত্তরাঞ্চলে আজারবাইজান সীমান্তের কাছে কুয়াশাচ্ছন্ন ঝড়ো আবহাওয়ার মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। এতে রাইসি ও তার সফরসঙ্গীরা নিহত হন। কট্টরপন্থি রাইসিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, “ইরানি জনগণের নিপীড়কের স্মৃতিচারণ না করে জাতিসংঘের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। রাইসি ১৯৮৮ সালে হাজার হাজার রাজবন্দিকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যাসহ বহু ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। রেকর্ডের কিছু মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা, বিশেষ করে নারী ও বালিকাদের বিরুদ্ধে, তিনি ক্ষমতায় থাকাকালেই ঘটেছে।”
এর আগে ২০ মে অন্য একটি বৈঠকের আগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল রাইসির মৃত্যুতে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করে শ্রদ্ধা জানিয়েছিল। তখন জাতিসংঘে মার্কিন মিশনের ডেপুটি রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বাকি ১৪টি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনিচ্ছার সঙ্গে দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেছিলেন।
২০ মে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাইসির মৃত্যুতে ‘আনুষ্ঠানিকভাবে শোক’ প্রকাশ করেছিল।
দেশের শেয়ারবাজারে স্বল্প মূলধনি কোম্পানি প্লাটফর্মে তালিকাভুক্ত হতে চায় ইউআরও এগ্রোভেট লিমিটেড । কোয়ালিফায়েড ইনভেস্টর অফারের (কিউআইও) মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১০ কোটি টাকা তুলতে চায় কোম্পানিটি। শেয়ারবাজারে আসতে কোম্পানিটি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে আবেদন করেছে।
জানা গছে, কোম্পানিটি কিউআইও’র মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১০ কোটি টাকা তুলবে। তা দিয়ে ব্যবসা প্রসারিতকরণ, ফার্মটি ভূমি উন্নয়নের জন্য ১০ লাখ টাকা, প্ল্যান্ট ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ৭.৬৫ কোটি টাকা, ভবন ও নির্মাণের জন্য ২ কোটি টাকা এবং কিউআইও ব্যয়ের জন্য ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করতে চায়।
কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
ইউআরও এগ্রোভেট লিমিটেড মূলত একটি কৃষিভিত্তিক ফিড এবং ওষুধ উৎপাদনে বিশেষজ্ঞ কোম্পানি। ব্যবহারযোগ্য দুগ্ধজাত খাবার, ফিড সাপ্লিমেন্ট এবং গবাদি পশুর ওষুধের প্রস্তুতকারক এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।
খুলনা ও ফেনীতে প্রতিষ্ঠানটির দুটি কারখানা রয়েছে। এটি খুলনা ইউনিটে HYTOP FEED ব্র্যান্ড নামে বিভিন্ন ধরনের দুগ্ধজাত খাবার তৈরি করে। ফেনী ইউনিটে তরল, পাউডার এবং ভেষজ আকারে ফিড পণ্য, খাদ্যের পরিপূরক, ভিটামিন এবং খনিজ উৎপাদন করে।
কোম্পানিটির দেশব্যাপী পণ্য বিতরণের জন্য নিজস্ব বিতরণ নেটওয়ার্ক রয়েছে। কারখানায় উৎপাদিত সমস্ত পণ্য ডিলার এবং খুচরা বিক্রেতাদের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে বিতরণ করা হয়।
পশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান প্রতিযোগীদের মধ্যে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, রেনাটা, ইনসেপ্টা এবং এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ডেইরি ফিড বিভাগে, প্রতিযোগীরা হল এসিআই গোদরেজ এগ্রোভেট, প্যারাগন পোল্ট্রি, নুরিশ পোল্ট্রি, কাজী ফার্মস, ইনডেক্স এগ্রো এবং নাবিল পোল্ট্রি লিমিটেড।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ২৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২.৭৫ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২.৪৬ কোটি টাকা । অথ্যাৎ ছয় মাসে মুনাফা ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর শেয়ার প্রতি আয় ছিল ০.৮০ টাকা । ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষে শেয়ার প্রতি নেট সম্পদ মূল্য ১২.৮০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা, যেখানে পরিশোধিত মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩৩.৬৯ কোটি টাকা।
তরুণদের চাকরির পেছনে না দৌড়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। এখন জাতিকে স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি।’
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পটুয়াখালীর কলাপাড়ার খেপুপাড়া সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসমাবেশে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তরুণদের সহজ শর্তে ঋণ দিচ্ছি। এ ঋণ নিয়ে তারা উদ্যোক্তা হয়ে নিজেরা সাবলম্বী হতে পারে, আবার কর্মসংস্থানও তৈরি করতে পারে। আমরা দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি।’
শেখ হাসিনা তার সরকারের নেওয়া নানান উন্নয়ন প্রকল্পের বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘সবগুলো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আমরা উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পাব।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশস্থলে ঘূর্ণিঝড় রিমলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দুই হাজার মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এদিন বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে পটুয়াখালীর উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলাপাড়ার খেপুপাড়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন হেলিপ্যাডে অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার।
আজ কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক নদীর ওপর নির্মিত শেখ কামাল সেতু পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্মেলনকক্ষে বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বিকেল ৫টায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের হেলিপ্যাড থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করার কথা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী প্রীতি খন্দকার হালিমার খোঁজ পেয়ে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি বলেন, ‘ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী প্রীতি খন্দকার হালিমাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিজয়নগরে আনা হচ্ছে। কীভাবে কী হয়েছে, সেটা তাকে নিয়ে আসার পর বলা যাবে।’
প্রীতি খন্দকারের স্বামী মাসুদ খন্দকার বলেন, ৫ জুন বিজয়নগর উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তার স্ত্রী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পদ্মফুল প্রতীকে নির্বাচন করছেন। সার্ভার ত্রুটির কারণে প্রীতির মনোনয়ন জমা দিতে সমস্যা হওয়ার ফলে হাইকোর্ট থেকে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। গত মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নে দুজন সহযোগী নিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় যান তিনি। হরষপুরের ঋষিপাড়ায় ঢুকে প্রচার করা অবস্থায় সহযোগী দুই মহিলা বাহিরে আসেন আর প্রীতি ভোটারদের সঙ্গে ভিতরে কথা বলছিলেন। ১০ থেকে ২০ মিনিট পার হলেও বের হচ্ছেন না বিধায় তারা আবার ভেতরে যান। গিয়ে তারা প্রীতিকে খোঁজে পাচ্ছিলেন না। এরপর বিষয়টি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ থানার ওসিকে জানানো হয়।
পরে প্রীতি খন্দকারের স্বামী মাসুদ খন্দকার এ বিষয়ে থনায় জিডি করেন। এতে তার স্ত্রীকে গুম করা হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেন।
রেমাল ঘূর্ণিঝড় এর আঘাত ও ভারী বৃষ্টিপাতে উপকূলীয় জনপদ খুলনার কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ উপজেলায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে; প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম।
ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে পড়েছে অসংখ্য বাড়িঘর ও গাছপালা। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে চিংড়ি ঘের; জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ অংশে ছয় হাজারের বেশি বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন।
উপকূলবাসী মনে করছেন, বরাবরের মতো এবারও প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে উপকূল রক্ষায় ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সুন্দরবন। নিজে লড়াই করে ঘূর্ণিঝড় থেকে উপকূলীয় জনপদকে রক্ষা করছে এই বন।
সুন্দরবনের কারণে এবারও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ‘কম’ হয়েছে বলে মনে করেন খুলনা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ।
তিনি বলেন, “ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের যে বাতাসের বেগ, সেটি ছিল ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এটি যখন উপকূলে আঘাত হেনেছে; তখন উপকূল এলাকায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাতাসের বেগ ছিল।
“ঝড়গুলো যে বেগে আসে, সেই তুলনায় ভূমিতে কম বেগে প্রবেশ করে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, এটা অতিক্রম করে সুন্দরবনের পাশ দিয়ে। সুন্দরবন এলাকায় এটা যখন প্রথমে ওঠে তখন দেখা যায়, বাতাসের যে সর্বোচ্চ গতি থাকে সেটা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়। পরে সামনে আগালেও সে গতিটা থাকে না।“
খুলনার সুন্দরবন-সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ক্লাইমেট মুভমেন্ট’ এর সমন্বয়ক শর্মিলা সরকার বলেন, “সুন্দরবন যেন উপকূল এলাকায় প্রকৃতির দেয়াল। বাংলাদেশে ঝড় প্রবেশের মুখেই সুন্দরবনের অবস্থান।
“এর কারণে ঝড় প্রবেশ করতেই বনে বাধার সম্মুখীন হয়। এতে বনের গাছপালা ও বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হলেও লোকালয়ে বড় দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে।”
খুলনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ননী গোপাল মণ্ডল বলছিলেন, ভৌগোলিকভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার জনপদ ও বঙ্গোপসাগরের মাঝখানে সুন্দরবনের অবস্থান। গাছপালায় আচ্ছাদিত সুন্দরবনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা কম টের পেয়েছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূল ও বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন এলাকার মানুষ। রেমাল উপকূলে আঘাত হানার সময় জলোচ্ছ্বাসের পানির উঁচু চাপও ঠেকিয়েছে এই বন।
ননী গোপাল বলেন, “ঝড়ের সময়ে সুন্দরবন নিজে লড়াই করে ক্ষতবিক্ষত হলেও উপকূলের তেমন ক্ষতি হতে দেয় না। তবে ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট উঁচু জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের কারণে সুন্দরবনের হরিণ, বানর, বেঙ্গল টাইগারসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।
“এছাড়া মিঠাপানির পুকুর তলিয়ে যাওয়ার কারণে বনের প্রাণিকুল ও বনকর্মীদের বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট তৈরি হতে পারে।”
সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষতি
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো জানান।
রোমালের আঘাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলেতিনি বলেন, “বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়্ উঁচু জোয়ারে বিস্তীর্ণ বনভূমি প্লাবিত হয়েছে। সাগরের নোনাপানিতে বনভূমির সঙ্গে তলিয়ে গেছে ৮০টি মিঠাপানির পুকুর।
“সেখান থেকে বনের প্রাণী ও বনজীবীরা খাবার পানি পেতেন। এতে বনে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট তৈরি হবে।”
বন সংরক্ষক বলেন, “অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে হরিণ ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ার খবরও মিলেছে। পাশাপাশি আরও বন্যপ্রাণীর মৃত্যু ও ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
“সুন্দরবনের গাছপালার কারণে ঝড়ের পুরো ধাক্কাটা টের পাননি সুন্দরবন-সংলগ্ন লোকালয়ের বাসিন্দারা।” বলছিলেন, সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির।
“যদিও সুন্দরবন এবারও ডুবেছে আরও উঁচু জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের পানিতে। ৫ থেকে ৭ ফুট উঁচু জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে গোটা সুন্দরবন।” যোগ করেন তিনি।
ঝড়ে বিধ্বস্তপ্রায় ৭৭ হাজার ৯০৪ বাড়িঘর
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল হুসেইন খান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খুলনার দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ৬০টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ও উপচে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে অসংখ্য গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
ঝড়ে প্রায় ৭৭ হাজার ৯০৪টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত এবং ৪ লাখ ৫২ হাজার ২০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
নাজমুল বলছেন, “এছাড়া ফসলের মাঠ, ঘের-পুকুর লোনা পানিতে ভেসে গেছে। ঘূর্ণিঝড় চলাকালে বটিয়াঘাটা উপজেলায় গাছ চাপা পড়ে লাল চাঁদ মোড়ল নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।”
খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য রশীদুজ্জামান মোড়ল জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপকূলীয় জনপদ পাইকগাছা ও কয়রায় বেশ কয়েকটি জায়গার বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বহু গাছপালা ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জমির ফসল। এরই মধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো পরিবার।
ফসলের ক্ষয়ক্ষতি
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জেলায় এবার ১২ হাজার ৭৪৮ হেক্টর জমিতে ফসল আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষেতে ছিল; যা ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছে।
আক্রান্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে, আউশ ধানের বীজতলা ৫৪ হেক্টর, তিল ৪৮৫ হেক্টর, মুগডাল ২৭০ হেক্টর, মরিচ ১৭৫ হেক্টর, আদা ৩৩ হেক্টর, হলুদ ২০৩ হেক্টর, চিনাবাদাম ৩০ হেক্টর, ভুট্টা দেড় হেক্টর, পেঁপে ৩১০ হেক্টর, কলা ৫৪৫ হেক্টর ও পান ৮৭৭ হেক্টর ও আখ ৭২ হেক্টর।
এসব ফসলের পাশাপাশি কয়েক হেক্টর জমির তরমুজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে।”
১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত
পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, “দাকোপের খলিশা, পানখালী, বটবুনিয়া ও কামিনিবাসিয়া এবং কয়রার দশালিয়া বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এই পাঁচটি জায়গা মিলে ১৫০ মিটারের মতো বাঁধ বিলীন হয়ে গেছে।
“দাকোপ, বটিয়াঘাটা, কয়রা ও পাইকগাছায় আরও ৬০টা পয়েন্টে পানি উপচে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাইকগাছায় অনেক জায়গায় ওভার ফ্লো হয়েছে। সব মিলিয়ে এরই মধ্যে ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
রেমানের ভুক্তভোগীরা জানান, স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে খুলনার কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ উপজেলার অনেক জায়গায় বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। কিছু কিছু জায়গায় পানি ঢোকা বন্ধ করতে পারলেও বড় ভাঙার জায়গাগুলো আটকানো সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল বলেন,ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সংস্কারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে মধ্যরাতে এক নারী শিক্ষার্থীকে ঘুমন্ত অবস্থায় পাওয়ার ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ইমামকে নামাজ পড়ানো থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ঘটনা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে একটি অংশ নারীদের জন্য আলাদা করা। ছাত্রীরা সেখানে নামাজ পড়েন। সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন সেই ছাত্রী।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম ছালাহ্ উদ্দীন বলেন, “আমি ওই ছাত্রীকে চিনতামও না। মসজিদের ভেতরে একজন মেয়ে শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন জেনে আমি সাথে সাথে প্রক্টরকে ফোন দিয়ে জানিয়েছিলাম। আমার মনে কোনো খারাপ চিন্তা থাকলে মেয়েটিকে দেখতে পেয়েই আমি প্রশাসনকে অবগত করতাম না। এখন তারা দায়িত্ব অবহেলার অজুহাত দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আমাকে অপসারণ করেছে।”
এর আগে মসজিদের পাশে বহু বছরের পুরনো একটি বড় কাঠলিচু গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছিল ছালাহ্ উদ্দীনের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের কাউকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে গাছটি কাটেন তিনি।
লিচু পাড়ার জন্য বাচ্চারা ঢিল দেওয়ায় এবং তাতে মসজিদের টিনে শব্দ হওয়ায় তিনি গাছ কাটেন বলে দাবি করেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ট্রেজারারের অনুরোধে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনকে অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউরোপের দেশ স্পেন। মঙ্গলবার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
‘ন্যায়বিচারের দিকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ এবং শান্তি অর্জনের একমাত্র পথ’ হিসেবে ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে স্পেন। স্বীকৃতির ঘোষণায় এ কথাই জানিয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ।