Monday, September 16, 2024
Home Blog Page 13

বেনজীরের বিচার চলবে : ওবায়দুল কাদের

0

বিদেশে থাকলেও দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিচার চলবে, বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের , দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার কোনো ছাড় দেবে না।

আজ রোববার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তদন্ত, মামলা, গ্রেপ্তার সবকিছু একটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সরকার এখানে দুদককে এড়িয়ে আগ বাড়িয়ে কেন ব্যবস্থা নেবে? সরকারের দুর্নীতিবিরোধী যেসব সংস্থা আছে তাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে তারও বিচার হবে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশে ১৯৭৫ পরবর্তীকালে কোনো শাসক ও সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার সেটা দেখিয়েছে। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারে। দুর্নীতি করার পর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কী সেটা দেখতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

সরকারের সহায়তায় বেনজীর আহমেদ বিদেশে পালিয়েছে- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সরকারের কারা গিয়ে তাকে বিমানে তুলে দিয়েছে? কোন অথরিটি গিয়ে তাকে তুলে দিয়েছে? অন্ধকারে ঢিল ছুড়বেন না।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এদেশ থেকে টাকা পাচারের সংস্কৃতি ও অর্থনীতি শুরু হয়েছে বিএনপির আমল থেকে। তারা ক্ষমতায় আসলে বিএনপি নেতারা অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের মহোৎসবে মেতে ওঠে। এটা দেশে ও বিদেশে প্রতিষ্ঠিত সত্য। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিএনপির দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক রহমান বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুর্নীতি কোন দেশে হয় না, এই দাবি কেউ করতে পারে না। আমাদের দেশে যিনি প্রধানমন্ত্রী, সরকার প্রধান, তিনি কোনো প্রকার দুর্নীতি করেন বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে কেউ দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা আপাদমস্তক সৎ রাজনীতিক- এটা বিশ্বে স্বীকৃত। তার জনপ্রিয়তার মূলে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম ও সৎ জীবনযাপন করেন।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির প্রধান নেতাই দণ্ডিত, পলাতক তারেক রহমান চিহ্নিত অপরাধী। এমন লোক যে দলে নেতৃত্ব দেয় সেই দল জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জনগণের বিশ্বাসও রাখতে পারে না। তারা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরপর পাঁচবার তারা দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেই বিএনপি’র গঠনতন্ত্র থেকে হঠাৎ করেই ৭ ধারা বাদ দিয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

উন্নয়নে যারা পাশে, তাদের সঙ্গেই বাংলাদেশ চলবে: শেখ হাসিনা

0

যুদ্ধকে এড়িয়ে শান্তি বজায় রাখার বার্তা নিয়ে উন্নয়নে সহযোগিতা করবে এমন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ” কার দেশের সঙ্গে কার দেশের ঝগড়া সেটা আমার দেখার দরকার নেই। নিজের দেশের উন্নয়নটা আমার আগে দরকার। উন্নয়নে যারা সহযোগিতা করবে আমি তাদের নিয়েই চলব। সেভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

“আমরা সবসময় শান্তি চাই, যুদ্ধ চাই না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই এবং সেই বন্ধুত্ব রেখেই কিন্তু আমি এগিয়ে যাচ্ছি।”

রবিবার গণভবনে ‘আমার চোখে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এক মিনিটের ভিডিও নির্মাণ প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন শেখ হাসিনা।

দেশের উন্নয়নযাত্রা অব্যাহত রাখতে সবাইকে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি, এই বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। ১৫ অগাস্টের পর আমাদের যেভাবে ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করেছে, আর যেন এটা না করতে পারে সেটা দেখতে হবে।”

বক্তব্যে নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “এখন যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ, বিজ্ঞানের যুগ ও জ্ঞানের যুগ। আমাদের ছেলেমেয়েদের বলব লেখাপড়া ছাড়া, জ্ঞান অর্জন ছাড়া, নিজেকেও তৈরি করতে পারব না, দেশকেও তৈরি করতে পারব না।

“আমাদের ছোট্ট সোনামনি, আমাদের নতুন প্রজন্ম তোমরাই একদিন এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু সেটা করতে হলে একটা আদর্শ লাগে। ইতিহাস থেকে শিখতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগামী দিনের পথ চলা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, আমরা যেন আরও সুন্দরভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সেভাবেই কিন্তু নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। ”

বাংলাদেশ কারো কাছে হাত পেতে নয়, আত্মমর্যাদা নিয়ে চলবে– সেই প্রত্যয় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “এই বোধটাই আমাদের মাথায় সবসময় রাখতে হবে। একটা কথা মনে রাখবে যে ভিক্ষুক জাতির কোন ইজ্জত থাকে না। ১৯৭৫ সালের আমরা কিন্তু ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত হয়েছিলাম।”

সঠিক ইতিহাস জানার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল, আজকে সেই ইতিহাস বিকৃতি আস্তে আস্তে মুছে গেছে। এখন সঠিক তথ্যটা চলে এসেছে।”

শেয়ারবাজার ছাড়লো আরও সাড়ে ১৫ হাজার বিনিয়োগকারী

0

দীর্ঘদিন যবাত দেশের শেয়ারবাজার পতনের বৃত্তে আটকে আছে। কিছুতেই বাজারে স্থিরতা আসছে না। একদিন সামনে এগুলে দুদিন পেছায়। যা কারণে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে না। শেয়ারবাজারে গতি না ফেরায় প্রতি মাসেই বিনিয়োগকারীরা বাজার ছাড়ছেন। বিপরীতে নতুন করে বাজারে বিনিয়োগকারীরা আসছেনও। তবে ছাড়ার তুলনায় আসার সংখ্যা কম।

মে মাসজুড়ে চলা পতনের কারণে মাত্র ১৯ কার্যদিবসে শেয়ারবাজার ছেড়েছেন প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার বিনিয়োগকারী। তার বিপরীতে পুরো মাসে শেয়ারবাজারে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ৮ হাজার বিনিয়োগকারী। ফলে যত বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন, তার প্রায় অর্ধেক বিনিয়োগকারী নতুন করে বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খুলে বাজারে যুক্ত হয়েছেন।

শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শেয়ার ধারণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএলের তথ্য থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ এপ্রিল শেয়ারবাজারে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫টি। আর মাসের শেষ কার্যদিবসে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৮টিতে। অর্থাৎ মে মাসজুড়ে ১৫ হাজার ৪৯৩ জন বিনিয়োগকারী তাদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন।

শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কমেছে শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা। মে মাসের শেষ কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে সক্রিয় তথা শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার ৩২৯টিতে। অথচ এপ্রিলের শেষ দিনে শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩৯টি। শেয়ারবাজারে যেসব বিও হিসাবে শেয়ার থাকে, সেগুলোকেই মূলত সক্রিয় বিও হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে সব মিলিয়ে ডিএসইর প্রধান সূচকটি ৩৩৩ পয়েন্ট বা সাড়ে ৬ শতাংশ কমেছে। মে মাসের শুরুতে ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল ৫ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টের অবস্থানে। গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটি কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২৫২ পয়েন্টে। এ কারণেই বেড়েছে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে শেয়ারবাজার ছেড়ে যাওয়া বিনিয়োগকারীর সংখ্যা। সিডিবিএলের হিসাবে, গত এপ্রিলেও প্রায় ১৬ হাজার বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজার ছেড়ে গিয়েছিলেন। সেই হিসাবে গত দুই মাসে প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন।

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু: ঈদযাত্রা

0

আগামী ১৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ধরে আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ রোববার (২ জুন) সকাল ৮টায় পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরুর মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ বছরের ঈদুল আজহার অগ্রিম টিকিট বিক্রি। গতবারের মতো এবারও ঈদের টিকিট পুরোপুরি অনলাইনে বিক্রি হবে।

আজ ২ জুন দেওয়া হচ্ছে ১২ জুনের টিকিট। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, এবার ঢাকা থেকে বহির্গামী ট্রেনের মোট আসন ৩৩ হাজার ৫০০টি।

পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করার সব আন্তনগর ট্রেনের আসনের টিকিট বিক্রি সকাল ৮টায় শুরু হলেও পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা সব ট্রেনের আসনের টিকিট দুপুর ২টায় বিক্রি করা হবে।

রেলওয়ের কর্মপরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়, ১৩ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৩ জুন; ১৪ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৪ জুন; ১৫ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৫ জুন; ১৬ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ৬ জুন।

একইভাবে ১০ থেকে ১৪ জুন ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। ২০ জুনের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হবে ১০ জুন, ২১ জুনের টিকিট দেওয়া হবে ১১ জুন, ২২ জুনের টিকিট দেওয়া হবে ১২ জুন, ২৩ জুনের টিকিট দেওয়া হবে ১৩ জুন এবং ২৪ জুনের টিকিট দেওয়া হবে ১৪ জুন।

ইউরোপের রাজা রিয়াল মাদ্রিদ

0

ইউরোপের সত্যিকারের রাজা রিয়াল মাদ্রিদ —এই কথাটি বললে ভুল হবে না মনে হয়! আসলে ভুল হওয়ার কোনো সুযোগই যে রাখেনি স্প্যানিশ ক্লাবটি। একবার নয়, দুবার নয় কিংবা ১০বার নয়, রেকর্ড ১৫তমবার ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় নিজেদের সেরা প্রমাণের মিশনে সফল রিয়াল মাদ্রিদ। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজা কার্লো আনচেলত্তির দল।

লন্ডনের ওয়েম্বলিতে শনিবার (১) মে দিবাগত রাত একটায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে জার্মান ক্লাবটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। শেষ ২০২২ সালে শিরোপা জেতা দলটি গেল আসলে ফাইনালে না উঠতে পারায় আক্ষেপ জমেছিল। এবার শিরোপা উদ্ধার করে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে ছাপিয়ে গেল নিজেদেরকেই।

ফাইনাল মহারণে জয়ের নায়ক দানি কারবাহাল ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র। বিরতির পর দুজনের গোলেই শিরোপা উৎসব করে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

ধারে-ভারে রিয়াল থেকে যোজন-যোজন পিছিয়ে ডর্টমুন্ড। শেষ ১০ বছর আগে এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলেছিল তারা। ফলে ওয়েম্বলির ফাইনালে নিশ্চিত ফেভারিটই ছিল রিয়াল। কিন্তু প্রথমার্ধের খেলা দেখলে ভুল প্রমাণ হতেন যে কেউই। রিয়াল নয় বরং বিরতির আগ পর্যন্ত রিয়ালের বুকে কাঁপন ধরিয়েছিল জার্মান ক্লাবটি।

অথচ শেষ মুহূর্তে পাশার দান পাল্টে দিয়েছেন ভিনিসিয়াস ও কারবাহাল। দুই তারকার গোলে কাঁদল ডর্টমুন্ড। ম্যাচটিতে আক্রমণে সমানে-সমান পাল্লা দিয়েও রিয়ালের রক্ষণ ভাঙতে পারেনি ডর্টমুন্ড। ম্যাচের ৪২ ভাগ সময় বল দখলে রেখে ১২বার আক্রমণে যায় জার্মান ক্লাবটি। যার মধ্যে চারবার অনটার্গেট শট নিয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি একটিও। অন্যদিকে ১৩ বার আক্রমণে গিয়ে দুটিতে সফল রিয়াল মাদ্রিদ।

তবে প্রথমার্ধ জুড়ে চাপে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ডর্টমুন্ডের আক্রমণে প্রথমার্ধে কোণঠাসা ছিল রিয়াল। তবে, বেশকিছু সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে না পেরে অস্বস্তিতে ছিল জার্মান ক্লাবটি। ম্যাচের ১৩ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগটি পায় তারা। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে নিকলাস ফুলক্রুগের ব্যাকপাস রিসিভ করেন  ডর্টমুন্ডের হুলিয়ান ব্রান্ট। এরপর বল নিয়ে ভেতরে ঢুকলেও পারেননি লক্ষ্যভেদ করতে। ব্রান্ট দূর্বল শট নিলে সেই যাত্রায় বেঁচে যায় রিয়াল মাদ্রিদ।

সাত মিনিট পর আবারও ডর্টমুন্ডের সুযোগ। কিন্তু, এবারও মিস! রিয়ালের গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াকে একা পেয়েও লিড আনতে পারেননি করিম আদেয়েমি। এরপর ২৩তম মিনিটে ফুলক্রুগের পা ছোঁয়া শট গোলবার থেকে ফিরে আসলে আবারও গোলহীন থাকে জার্মান ক্লাবটি।

বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে আরেকবার আক্রমণে যায় ডর্টমুন্ড। এবার মার্সেল সাবিটজারের দূর পাল্লার শট ঠেকিয়ে রিয়ালকে রক্ষা করেন কোর্তয়া। ফলে গোলহীন থেকেই বিরতিতে যেতে হয় জার্মান ক্লাবটিকে।

বিরতি থেকে ফিরেই অবশ্য দৃশপট বদলে দেয় রিয়াল। যথারীতি ধারণ করে বিধ্বংসী চেহারা! মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই দুইবার ডর্টমুন্ডের জালে বল পাঠিয়ে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। বনে যায় রাজা।

প্রথম গোলটি আসে ৭৪তম মিনিটে। ক্লাব ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা টনি ক্রুসের কর্নার থেকে বাড়ানো বলে মাথা ছুঁইয়ে লিড এনে দেন দানি কারবাহাল।

এর ৯ মিনিট পর আবারও রিয়ালের উৎসব। এবার উৎসবের উপলক্ষ্যটা এনে দেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ২০২২ সালের ফাইনালের গোলদাতা এবারও নাম তুললেন স্কোরশিটে। ৮৩ মিনিটের মাথায় জুড বেলিংহামের পাস থেকে সহজ প্লেসিং শটে স্কোরলাইন ২-০ করেন ভিনি। সঙ্গে সঙ্গে উৎসবে ফেটে পড়ে রিয়াল। আর হলুদে জার্মানিরা পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। ম্যাচের বাকি সময় শুধুই অপেক্ষা। নির্ধারিত সময় ও ইনজুরি সময় পেরিয়ে অবশেষে এলো উৎসবের ক্ষণ! যে উৎসব শুধুই ইউরোপের সত্যিকারের রাজাদের!

৩০ শে জুনেই এইচএসসি পরীক্ষা শুরু : ঢাকা শিক্ষা বোর্ড

0

এইচএসসি পরীক্ষা এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে একটি গুজব গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটিকে ভুয়া আখ্যায়িত করে বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। আজ শনিবার (১ জুন) সকালে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর তারিখ সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা শাখা কর্তৃক ইস্যু করা নয়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সময়সূচি অনুসারে আগামী ৩০ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’

সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ধরনের অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।

এ ছাড়া পূর্বঘোষিত পরীক্ষার তারিখ পেছানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাসারও।

এই যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় এসেছে: মার্কিন প্রেসিডেন্ট

0

প্রায় আট মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইল সর্বাত্মক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু প্রশাসন গাজায় হামাস নির্মূলের নামে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ত্রাশ চালিয়ে যাচ্ছে। এর মূল ইন্ধনদাতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকার। তবে এবার ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন। শুক্রবার (৩১ মে) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলের পক্ষ থেকে গাজার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে একটি নতুন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ প্রস্তাবটি তিন-পর্যায়ে বিভক্ত। প্রথম পর্যায়ে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এর মধ্য দিয়ে গাজার সমস্ত জনবহুল এলাকা থেকে ইসরাইলি বাহিনীকে সরিয়ে নেয়া হবে।হোয়াইট হাউসে বাইডেন গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য একটি রোড ম্যাপের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেন। এ ধরনের প্রস্তাব আগে কখনও হামাসকে দেয়া হয়নি। তিনি হামাসকে এ প্রস্তাব মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। তার ভাষ্যমতে, ’গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার এখনই সময়।’

হোয়াইট হাউসের দেয়া এ ভাষণের মধ্য দিয়ে বাইডেন ইসরাইল-গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিয়েছেন। তবে তিনি দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে ইসরাইলের হামলার বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

চলতি বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে জো বাইডেনের প্রতিদ্বন্দী হয়ে লড়বেন ৭৭ বছর বয়সি রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের আগে গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বাড়িতে চাপের মধ্যে রয়েছেন বাইডেন। কারণ ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ক্যাম্পাস বিক্ষোভসহ নিজদলীয় নেতারাও ক্ষুব্দ বাইডেনের ওপর।

ইসরাইলের নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যা আছে


বিবিসি জানিয়েছে, ইসরাইলের নতুন প্রস্তাবটি তিনটি পর্যায়ে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে। এ সময়ে গাজার সব জনবহুল এলাকা থেকে ইসরাইলি সেনাদের তুলে নেয়া হবে। যুদ্ধবিরতির সময় হামাস ‘নির্দিষ্ট সংখ্যক’ জিম্মিকে মুক্তি দেবে। তাদের মধ্যে নারী, বয়স্ক ব্যক্তি এবং আহত জিম্মিরা থাকবেন। এর বিনিময়ে ইসরাইলি বন্দি থাকা কয়েক শ মানুষকে মুক্তি দেয়া হবে।

এসময় গাজার সব এলাকায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘরে ফিরতে সুযোগ দেয়া হবে। সেই সঙ্গে গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানো হবে। এই যুদ্ধবিরতি চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্ততায় শান্তি আলোচনা চলমান থাকবে। যদি আলোচনা সফল হয়, তাহলে পরবর্তী পর্যায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। সেই সঙ্গে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর সর্বশেষ সেনাকেও সরিয়ে নেয়া হবে। যুদ্ধবিরতিকে ‘স্থায়ীভাবে শত্রুতা বন্ধে’  উন্নীত করা হবে।

তৃতীয় পর্যায়ে জিম্মি ফেরানোর প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ করা হবে। গাজার জন্য বড় ধরনের একটি ‘পুনর্গঠন পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। এর আওতায় মার্কিন ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় গাজা উপত্যকায় বাড়ি, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল পুনর্নির্মাণ করা হবে।

আমেরিকার স্টেডিয়াম দেখে অবাক নাজমুল শান্ত

0

যুক্তরাষ্ট্র সচরাচর ক্রিকেটে জনপ্রিয় নয়। আইসিসির মূল ইভেন্টগুলোতেও নেই তাদের উপস্থিতি। তবে, এবার আয়োজক দেশ হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে দেশটি। ক্রিকেটের বড় এই ইভেন্টকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাস ধরেই প্রস্তুত হচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

এই যেমন একটা সাধারণ মাঠকেই বিশ্বকাপের ভেন্যুতে রূপ দিয়ে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে ৩৪ হাজার দর্শকধারণ ক্ষমতার একটি স্টেডিয়াম বানিয়ে ফেলেছে তারা। যার নাম নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়াম। এটাই ক্রিকেটের প্রথম ‘মডিউলার’ বা অস্থায়ী স্টেডিয়াম।

স্টেডিয়ামটির ডিজাইন করেছে পপুলাস নামের একটি কোম্পানি। তবে স্টেডিয়ামটির পিচ বানানো ছিল চ্যালেঞ্জিং। সেই চ্যালেঞ্জিং কাজটা করেছে ‘অ্যাডিলেইড ওভাল টার্ফ সলিউশন্স।’ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেইড ওভালের প্রধান কিউরেটর ড্যামিয়ান হাউ এই প্রতিষ্ঠানেরও প্রধান। তার অধীনেই তৈরি হয় এখানকার পিচ।

এত অল্প সময়ের মধ্যে গড়ে ওঠা স্টেডিয়ামটি দেখে রীতিমতো অবাক বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আগামীকাল এই মাঠেই ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। দুদলের প্রস্তুতি ম্যাচ শুরুর আগে ভেন্যুতে মুগ্ধ হয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত বলেন, ‘ ‘অবিশ্বাস্য। খ্যাপাটে মনে হচ্ছে। মানে (তিন মাস আগেও) ইন্টারনেটে দেখেছি কিছুই ছিল না। এখন একেবারে পুরোদস্তুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মতো দেখাচ্ছে। দারুণ অনুভূতি।’

বাংলাদেশি তারকা আরও বলেন, ‘এমন হবে প্রত্যাশা করিনি। আমার মনে হচ্ছে একেবারে পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম। মাঠটিকেও বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে। পুরোদস্তুর ক্রিকেট মাঠ। সত্যি বলতে কি, এমন কিছু প্রত্যাশা করিনি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি উইকেট কেমন দেখাচ্ছে, মাঠ কেমন হবে। এখানে যা হতে চলেছে, তাতে রোমাঞ্চিত। দারুণ লাগছে।’

”তুমি কোথায় চলে গেলে আব্বু”: এমপি আনার কণ্যা ডরিন

0

এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের পুলিশ।

এ অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাতে (১ জুন মে) বাবাকে নিয়ে আবেগঘন একটি পোস্ট দেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

বাবাকে নিয়ে ডরিন তার পোস্টে লিখেছেন, ‘তুমি কোথায় চলে গেলে আব্বু আমার, এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।’এরআগে ২৯ মে’র একটি পোস্টে বাবাকে ভীষণভাবে মিস করার তথ্য জানান ডরিন। তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘আব্বু তোমার কথা অনেক মনে পড়ে। জানো আব্বু সবাই আমাকে এখন বলে এতিম মেয়েটার বাবা নাই। আমার জানো তখন অনেক কষ্ট হয় বুকটা ফেটে যায়।’

পুলিশের তথ্যানুযায়ী, আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহিন। ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহিদুজ্জামান সেলিমের ভাই তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শাহিন কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের ৫৬বিইউ ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়ার কথা স্বীকার করলেও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ রয়েছে ওই ফ্ল্যাটেই হত্যা করা হয় আনারকে।

তবে অভিযুক্ত শাহিনের দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই জড়িত নন। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তাই তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজিম।

বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পরে, গত ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। বুধবার হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় বহুতল সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।

ঘূর্ণিঝড় রেমালে ঢাকায় এত গাছ ভাঙল কেন ?

0

ঢাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে প্রাণ গেছে প্রায় তিনশ বড় আকারের গাছের। এসব গাছের বেশিরভাগই ছিল বিভিন্ন সড়কের মিডিয়ান, ফুটপাত, সড়কদ্বীপে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘরের গাছও ভেঙেছে ওই ঝড়ে।

দুই সিটি করপোরেশনের হিসাবে, ঢাকার উত্তরে ২০০টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ভেঙে পড়া গাছের সংখ্যা ৯৪টি। এই তালিকায় ছোট, গুল্ম বা লতাজাতীয় গাছ আসেনি।

গত রবি ও সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমালে রাজধানীতে যে পরিমাণ গাছ ভেঙেছে, নিকট অতীতে কোনো ঝড়ে এত বেশি গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা।

এজন্য তারা গাছ লাগানোয় পরিকল্পনার অভাব, গাছের নিয়মিত পরিচর্যার অভাবকে দায়ী করছেন।

ঢাকায় কত গাছ আছে, তার কোনো সঠিক হিসাব পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি শহরের আয়তনের ২৫ শতাংশে গাছ থাকতে হয়। ঢাকায় আছে মাত্র ২-৪ শতাংশ।

রাজধানীতে সবুজের পরিমাণ বাড়াতে আরও আলাদা কর্মসূচির আওতায় শহরে তিন লাখ বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। ডিএনসিসির পরিকল্পনায় থাকা দুই লাখ গাছের মধ্যে এরইমধ্যে ৮৫ হাজার ৮৪৫টি গাছ লাগানো হয়েছে। আর ডিএসসিসি এক লাখের মধ্যে ২৫ হাজার গাছ লাগিয়েছে।

গাছ ভাঙল কেন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গাছ না লাগানো, গাছের শেকড় ছড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা না থাকা, উন্নয়নকাজের সময় গাছের শিকড় কেটে ফেলা, জরাগ্রস্ত গাছ অপসারণ না করাসহ বিভিন্ন কারণে এবার গাছ ভেঙেছে বেশি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের মতে, বৃক্ষরোপণের আগে-পরে তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। গাছের প্রজাতি নির্বাচন, কোন জায়গায় গাছ কোন গাছ রোপণ করা হবে এবং বৃক্ষরোপণের পর সেগুলোর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট্কমকে বলেন, “যেসব গাছের চারা ঢাকায় রোপণ করা হচ্ছে সেগুলো পলিথিন বা টবে জন্মানো হয়। এতে প্রাথমিক মূলটা বাড়তে পারে না, জমাটবদ্ধ হয়ে যায়। ওই গাছ রোপণ করা হলেও মূল শিকড় হয় না।

“সেই চারা তুলে মাটিতে রোপণ করার পর মূল শিকড়টা মাটির গভীরে যেতে পারে না। যতগুলো গাছ পড়েছে, দেখবেন মাটির গভীরে কোনো মূল নাই। বীজ দিয়ে গাছ লাগালে সবচেয়ে ভালো। পলিথিনের চারা হলে মাটিটা বিশেষভাবে বড় গর্ত করে রোপন করা উচিত, যাতে শিকড়টা যেখানে বাড়বে সেখানে যেন পর্যাপ্ত জায়গা থাকে।”

এই উদ্ভিদবিদ বলেন, ঢাকায় গাছের মূল প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না পাওয়াও একটা বড় কারণ। বিভিন্ন সময় গাছের শিকড় কেটে ফেলা হয়।

“এমন জায়গায় গাছ লাগানো হচ্ছে যার চারপাশে কংক্রিট। সড়ক বিভাজক একেবারে সরু, গভীরতা কম, প্রশস্ততাও কম। সেখানে গাছ লাগানো হচ্ছে। একদিকে মাটি ঠিক নাই, কংক্রিটের কারণে সে বাড়তে পারছে না। ড্রেনেজ সিস্টেম, স্যুয়ারেজ লাইন, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেটসহ নানা ইউটিলিটি সার্ভিস বসাতে গিয়ে শিকড় কেটে ফেলা হয়েছে। শিকড় কাটার ফলে গাছগুলো ভারসাম্যহীন হয়ে যায়, বাতাসে ভেঙে পড়ে।”

পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ‘তরুপল্লবের’ সাধারণ সম্পাদক মোকারম হোসেন আরেকটি পর্যবেক্ষণ তুল ধরেছেন।

তার ভাষ্যে, ঢাকায় লাগানো বেশিরভাগ গাছই বিদেশি। বাংলাদেশের মাটির সঙ্গে এসব গাছের ভালো সংযোগ হয় না।

ঘূর্ণিঝড় রেমালে ভেঙে পড়া গাছ পর্যবেক্ষণ করে তিনি বলেন, “ভেঙে পড়া গাছের একটা বড় অংশ কৃষ্ণচূড়া। এই গাছের কাণ্ড, শিকড়, ডালপালা সবই নরম। আমার পর্যবেক্ষণে দেখেছি, রোববার ঢাকায় যত গাছ পড়েছে তার একটা বড় অংশ কৃষ্ণচুড়া। এই গাছ ফুটপাতে, সড়ক বিভাজকে লাগানো যাবে না।”

তিন লাখ গাছ সঠিক জায়গায়?

দুই সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনায় বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত, মিডিয়ান, বিভিন্ন পার্কে তিন লাখ গাছ লাগানো হবে। এছাড়া কিছু গাছ লাগানো হবে নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস আছে– এমন এলাকায়।

ডিএনসিসি জানিয়েছে, বড় গাছের মধ্যে কাঠবাদাম, ছাতিম, বকুল, সোনালু, জারুল, রসকাউ এবং শোভাবর্ধনকারী কাটামেহেদী, চায়না টগর এবং রঙ্গন থাকবে সড়কে। আর বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনায় দেশীয় গাছকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা জানিয়েছে ডিএসসিসি।

প্রকৃতিবিদ মোকারম হোসেন বলছেন, উত্তর সিটি করপোরেশন যে গাছ লাগাচ্ছে সে তালিকা দেখেছেন তিনি। তার মনে হয়েছে ছাতিম, কদম, কাঠবাদাম ফুটপাতের উপাযোগী নয়।

“ছাতিম গাছের ডায়া কত, ডালপালা কোথায় আসবে, কত উপরে থাকবে সেসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফুটপাতের ওপর বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় গাছের মাথা কেটে দিতে হবে। কদম গাছ এবং কাঠবাদামের ডাল নরম। ঝড় হলে এসব গাছ, গাছের ডাল ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে।”

তিনি বলেন, “এভিনিউ ট্রি হিসেবে দেবদারু, স্বর্ণচাঁপাসহ কিছু গাছ আছে যেগুলোর ডাল ভাঙে না। এসব গাছ ফুটপাতে লাগানো যায়। ডিএনসিসি উদ্ভিদ বিন্যাসের যে পরিকল্পনা করেছে, তা উদ্ভিদবিদদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে করা হয়নি বলে আমি মনে করি।”

আর ঢাকায় দেশীয় প্রজাতির গাছ না লাগিয়ে বিদেশি গাছের দিকে নগর কর্তৃপক্ষের ঝোঁকের খেসারত দিতে হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, “ঢাকা সাজাতে হবে ঢাকার আদি বৃক্ষ দিয়ে। বিদেশি বৃক্ষ দিয়ে নয়। কিন্তু আমরা বিদেশি বৃক্ষের প্রতি ঝুঁকছি। বৃক্ষরোপণ একটি বিজ্ঞান। এর বাইরে গিয়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে যদি আপনি গাছ লাগান তাহলে তা সাসটেইনেবল হবে না। ঢাকার গাছ নিয়ে এখন যা হচ্ছে তা হতেই থাকবে।”

তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, পারিপার্শ্বিক সবকিছু বিশ্লেষণ করেই ঢাকায় বৃক্ষরোপণ হয়। এরপরও ঝড়ের গতিবেগ বেশি থাকলে গাছ পড়ে যায়।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের কাজ করে যাব। আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে নেব কোন গাছ কতটা সহনীয়। আমরা আগামী সপ্তাহে একটি মিটিং করব বৃক্ষরোপণ বিষয়ে। সেখানে বিষয়টা তুলব। কোন গাছ ঝড়ে ভাঙবে না, কোন গাছ বেশি ছায়া দিতে পারে।”

গাছ নির্বাচনে ভুল হচ্ছে– পরিবেশবিদদের এমন মতামতের বিষয়ে তিনি বলেন, “উনারা উনাদের পরামর্শ আমাকে লিখিত আকারে দিতে পারেন। আগামী সপ্তাহে আমি একটা স্টেকহোল্ডারস মিটিং করছি। সেখানে সবার সঙ্গে কথা বলব, সম্মিলিতভাবে যেটা ঠিক হবে আমরা সেটাই লাগাব।”

অন্যদিকে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের দাবি করেছেন, ঝড়ে যেসব গাছ পড়েছে সেগুলো বেশিরভাগই ফুটপাতের নয়। বিভিন্ন বাড়িঘরের গাছ সড়কে, ফুটপাতে পড়েছে।

“শক্তপোক্ত গাছ, পর্যাপ্ত মাটি আছে, এমন জায়গা থেকে পড়েছে অনেক গাছ। আমাদের ধারণা বাতাসের তীব্র গতি এবং দীর্ঘ সময় ধরে চলা ঝড়ের কারণে গাছগুলো উপড়ে পড়তে পারে।”

“আমাদের নিজস্ব আরবরিকালচারিস্ট আছেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় গাছ লাগানোর সময় পরামর্শকদের পরামর্শ নেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনা আছে সড়কে ফুটপাতে দেশি গাছ লাগানোর। বিভিন্ন প্রকল্প এবং গণপরিসর মিলিয়ে এক লাখের বেশি গাছ লাগানো হবে। এরইমধ্যে ২৫ হাজার গাছ লাগানো হয়ে গেছে।”