Monday, September 16, 2024
Home Blog Page 11

গাজা থেকে ইসরায়েলি চার জিম্মি উদ্ধার

0

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী মধ্য গাজা থেকে চারজন জিম্মিকে উদ্ধার করেছে। কয়েক সপ্তাহব্যাপী পরিকল্পনার পর অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়। তবে সেই অভিযানে শিশুসহ অনেক ফিলিস্তিনি মারা গেছে বলে জানা যাচ্ছে।

ইসরায়েলিদের জন্য এ অভিযান স্বস্তি নিয়ে আসলেও ফিলিস্তিনিদের জন্য সেটা আরো দুর্ভোগ তৈরি করেছে।

গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘনবসতিপূর্ণ নুসিরাত ক্যাম্পে অভিযানে শিশুসহ ডজন-খানেক লোক মারা গিয়েছে।

“সীডস অব সামার” নামে অভিহিত এই অভিযান অস্বাভাবিকভাবে দিনের বেলায় পরিচালনা করা হয়েছিল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে আরো বেশি চমকে দিয়েছে।

সকালের মাঝামাঝি সময়ে সাধারণত রাস্তাগুলো ব্যস্ত থাকে। লোকজন নিকটবর্তী দোকানে কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকে।

ওই এলাকায় ঢুকে অভিযান চালানো ইসরায়েলি স্পেশাল ফোর্সের জন্য শুধু যে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল তা নয়, বিশেষ করে বের হওয়াটা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

স্পেশাল ফোর্সের একজন কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বলে ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে।

১৯৭৬ সালে উগান্ডা থেকে একশজন জিম্মিকে ইসরায়েলের উদ্ধারের কথা উল্লেখ করে আইডিএফ এর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার এডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, “ এটা এনটেবিতে যে রকম অভিযান ছিল সেরকমই একটা”।

তিনি বলেছেন, স্পেশাল কমান্ডোরা একইসাথে নুসিরাত ক্যাম্পের দুইটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়েছিল যেখানে জিম্মিদের রাখা হয়েছে।

একটা অ্যাপার্টমেন্টে ২৬ বছর বয়সী একজন জিম্মি নোয়া আরগামানি ছিল। অন্যটিতে ৪১ বছর বয়সী স্লোমি জিভ, ২৭ বছর বয়সী আন্দ্রে কজলভ এবং ২২ বছর বয়সী আলমগ মির জেন ছিল।

মি. হাগারি বলেন তারা খাঁচায় আটকা ছিল না কিন্তু রুমে তালাবদ্ধ ছিল যেখানে তাদের রক্ষীরা পাহারা দিচ্ছিল।

তিনি বলেন, ইসরায়েলি কমান্ডোরা সেখানে অভিযান চালিয়ে নিজেদের শরীর দিয়ে জিম্মিদের ঘিরে রাখে। বাইরে থাকা সামরিক গাড়িতে ওঠানোর আগে পর্যন্ত এভাবে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হয়।

চলে যাওয়ার সময় তারা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছিল, বলেন তিনি।

মি. হাগারি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বিস্তারিতভাবে অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল। এমনকি প্রশিক্ষণের জন্য অ্যাপার্টমেন্টের নমুনাও তৈরি করেছিল।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া মোবাইল ফোনের ভিডিওতে দেখা যায় ক্ষেপণাস্ত্রের বাঁশি এবং গোলাগুলির শব্দ শুনলে লোকজন আত্মরক্ষার জন্য নিচু হয়ে পড়ছে।

পরের ফুটেজে রাস্তায় মরদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।

এই অভিযানে স্পষ্টতই বড়সড় ফোর্স জড়িত ছিল। মধ্য গাজার দুইটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭০ টিরও বেশি মরদেহ তারা গণনা করেছেন।

নিহতের সংখ্যা একশরও কম বলে মি. হাগারি অনুমান করছেন। কিন্তু হামাসের মিডিয়া অফিস বলছে দুইশ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে।

হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি।

নুসিরাতে আশ্রয় নেয়া নোরা আবু খামিস কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বিবিসিকে বলেন, “ আমি আমার সন্তানের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করেছি, আমার প্রিয় সন্তান”।

“আমার আরেক সন্তান জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এমনকি আমার স্বামী এবং শাশুড়ি আমার পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা একটা গণহত্যা”।

দশ বছর বয়সী আরিজ আল জাদনেহ কাছের একটি হাসপাতালে আমাদের সাথে কথা বলেছেন। বিমান হামলা, ট্যাঙ্ক এবং গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

“ আমরা শ্বাস নিতে পারছিলাম না। আমার বোন রিমাজের মাথায় শার্পনেলের আঘাত লেগেছিল এবং আমার পাঁচ বছরের বোন ইয়ারাও শার্পনেলের আঘাতে আহত হয়েছে”।

নাগালে থাকা ম্যাচে ভারতের কাছে পরাস্ত পাকিস্তান

0

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ৬ রানে হারলো পাকিস্তান। ম্যাচের অনেকটা জুড়ে মনে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জিতে যাবে পাকিস্তান।

কিন্তু মাত্র ১১৯ রান হাতে নিয়ে এমন এক জয় তুলে নিলো ভারত। যা অনেকদিন মনে রাখবে ক্রিকেট সমর্থকরা। ম্যাচ শেষে টেলিভিশন ধারাভষ্যকাররা বলছিলেন ব্যাটারদের কঠিন দিনে বোলাররা বাঁচিয়ে দিলেন তাদের।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সহযোগী দল আমেরিকার বিপক্ষে হারের পর ভারতের বিপক্ষে এই হারে টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের আশা প্রায় শেষ। এই গ্রুপে কানাডাও এক ম্যাচে জয় পেয়েছে, কিন্তু পাকিস্তান ২ ম্যাচে ২ হার।

জনপ্রিয় ক্রিকেট উপস্থাপক হারশা ভোগলে ম্যাচের মাঝেই এক্স প্ল্যাটফর্মে পোস্ট দিয়েছেন, “এই একই দল ইউএসএর বিপক্ষে খেলেছে দেখে বিশ্বাস হয় না। পাকিস্তান যেন অননুমেয় ক্রিকেট খেলাটা শিল্পে পরিণত করে ফেলেছে”।

বিবিসির টেস্ট ম্যাচ স্পেশালের ধারাভাষ্যকার প্রকাশ ওয়াকাঙ্কার বলেন, “আরও একবার পাকিস্তান ম্যাচ হারার কায়দা খুঁজে বের করে ম্যাচ হারলো।”

নিউ ইয়র্কের নাসাউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ৩৪ হাজার ধারণক্ষমতার বেশিরভাগ জুড়েই ছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা।

গোটা গ্যালারি নীল রঙে ছেয়ে ছিল, দেখে মনে হচ্ছিল এটা নিউ ইয়র্ক না, হায়দ্রাবাদ বা আহমেদাবাদ।

ম্যান অফ দ্য ম্যাচের স্মারক নেয়ার সময় ভারতের জয়ের নায়ক জসপ্রিত বুমরাহ বলছিলেন, “মনেই হয়নি আমরা ভারতের মাটিতে খেলছি না”।

ম্যাচের শুরু থেকে বৃষ্টি বারবার বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল, বিলম্বে অনুষ্টিত টসে জিতে বাবর আজম কোনও দ্বিতীয় ভাবনা ছাড়াই বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন।

শুরুতে ব্যাট করে ভারত তিন ওভারের মাথায় দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটার ভিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার উইকেট খোয়ায়।

এরপর পাকিস্তানের বোলাররা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিয়ে ভারতকে আর স্বস্তিতে রাখেনি। ছয় বল আগেই ১১৯ রানে ১০ উইকেট হারায় ভারত। জবাবে পাকিস্তান পুরো ২০ ওভার খেলে ১১৩ রান তোলে।

এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি দেখায় ভারতের ছিল ৬টি জয়, পাকিস্তানের ১ টি, এখন ভারত ৭, পাকিস্তান ১।

২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের জার্মানি বনাম ব্রাজিল ম্যাচের পর থেকেই এই ৭-১ স্কোরলাইন ক্রীড়াজগতের এক বিখ্যাত স্কোরলাইন।

ইতালিতে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘মাফিয়ারা’ ঢুকে পড়ার অভিযোগ

0

ইতালিতে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘মাফিয়ারা’ ঢুকে পড়ার অভিযোগ করে সেখানে বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে ভিসা ‘কেনাবেচার’ কথা তুলে ধরেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি।

সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর এসব বক্তব্য দেওয়ার কথা এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়েছে।

বিভিন্ন অঞ্চলে শ্রম ভিসায় ঢোকার ব্যক্তিদের তুলনায় কাজের চুক্তি সইয়ের পরিমাণ অতি নগন্য হওয়ার কথা তুলে ধরে জর্জা মেলোনি বলেন, “এর মানে কী? আমাদের ধারণা, কাজের জন্য বৈধ অভিবাসনের প্রক্রিয়াকে অবৈধ অভিবাসনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

“তার মানে হচ্ছে, সংগঠিত অপরাধীচক্র আবেদন প্রক্রিয়ায় অনুপ্রবেশ করেছে এবং এক্ষেত্রে তারা ‘বৈধ পথে ঢোকার ডিক্রিকে’ ব্যবহার করে আইনি ও ঝুঁকিমুক্তভাবে এমন লোকদের ইতালিতে প্রবেশ করাচ্ছে, যারা এমনিতে প্রবেশ করতে পারত না।”

একক দেশ হিসাবে বাংলাদেশ থেকে অধিকাংশ ব্যক্তির কাজের ভিসায় ঢোকাকে ‘অপরাধীদের অনুপ্রবেশের’ প্রমাণ হিসাবে তুলে ধরেন মেলোনি। তিনি বলেন, “কূটনৈতিক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে সেখানে কাজের ভিসা বেচাকেনা করার কথা বলেছে।”

ভিসার কেনাবেচার ক্ষেত্রে ১৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত হাতবদল হওয়ার কথাও বলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি।

চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ইতালিতে অবৈধ অভিবাসীদের হিসাবে বাংলাদেশিরা এক নম্বরে থাকার কথা তুলে ধরে ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এর মাধ্যমেও উৎস ও গন্তব্য দেশের অপরাধী সংগঠনের মধ্যে জোরালো সংযোগের বিষয় উঠে আসে।”

ইতালিতে কর্মী সংকট কাটাতে ও অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ বন্ধ করতে ২০২২ সালে বিপুল সংখ্যক কর্মী নেয়ার ঘোষণা দেয় ইতালি।

এর আওতায় ২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ধারাবাহিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের ৩৩টি দেশ থেকে প্রাঁয় পাচ লাখ কর্মী নেওয়ার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের আবেদন প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী আবেদন করেন বৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশের জন্য।

খুব দ্রুত প্রক্রিয়া শেষ করে দেশটিতে বৈধভাবে প্রবেশ করলেও দেশটিতে পৌঁছানোর পর নির্দিষ্ট মালিকের সঙ্গে কাজ না করে বা নির্দিষ্ট মেয়াদের পর থেকে গিয়ে অবৈধ হয়ে যাচ্ছেন এসব কর্মী। এরমধ্যে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া ইতালির কাজের ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে ‘ব্যাপক দুর্নীতির’ অভিযোগও আসছে।

গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির দপ্তর পালাজ্জো কিজি থেকে নতুন এক নির্দেশনা দেওয়া হয়। মন্ত্রী পরিষদের সেক্রেটারি আলফ্রেদো মানতোভানো প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে এ নির্দেশনা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেন।

সেখানে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি অবৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ বন্ধে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। গতবছরের তুলনায় এবছর এই সময়ে ৬০% অভিবাসী কম প্রবেশ করেছে। এজন্য তিনি (জর্জা মেলোনি) উত্তর আফ্রিকার দেশ ও তিউনিসিয়া এবং লিবিয়াকে ধন্যবাদ জানান।

“তবে তিনি এবার আরো একটা সমস্যার কথা স্পষ্ট করে বলেছেন। বিভিন্ন দেশের কর্মীরা বৈধভাবে ইতালিতে প্রবেশ করলেও পরবর্তীতে তারা অবৈধ হয়ে যাচ্ছে।”

২০২৩ সালে ১ লাখ ৩৬ হাজার কর্মী আসার কথা থাকলেও এরজন্য ২ লাখ ৮২ হাজার কর্মী আবেদন করেন। তবে শুধুমাত্র দেশটির “কামপানিয়া” অঞ্চল থেকে ১ লাখ ৫৭ হাজার আবেদন জমা পরে। আর ২০ হাজার আসে অন্য অঞ্চল পুয়িয়া থেকে। যেখানে কিনা পুয়িয়াতে ১২% কোম্পানি রয়েছে ইতালিয়ান নাগরিকদের আর সবচেয়ে বেশি আবেদন করা কামপানিয়ায় মাত্র ৬% কোম্পানির মালিক ইতালিয়ান।

এদিকে ২০২৩ সালে কামপানিয়ায় প্রবেশ করা কর্মীদের মধ্যে মাত্র ৩% কর্মী মালিকের সাথে কাজ করলেও ৯৭% থেকে যায় অবৈধ। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ মৌসুমি কর্মী নির্দিষ্ট সময় শেষে নিজ দেশে ফিরে যাননি।

বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করছেন প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি। এ নিয়ে দেশটির তদন্তে মানবপাচার ও ভিসা কেনা-বেচার মত তথ্য পেয়েছে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ।

বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশি অভিবাসী ও কর্মীদের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, দেশটিতে ইতালির ভিসা কেনা-বেচার তথ্য পেয়েছে ঢাকায় ইতালির দূতাবাস।

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ইতালির ভিসা ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার ইউরো করে কেনা-বেচা হয়। বাংলাদেশ ও ইতালিতে থাকা কিছু সংঘবদ্ধ চক্র এর সঙ্গে জড়িত, যারা নামে-বেনামে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে কোম্পানি বানিয়ে মানবপাচার করছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ইতালিতে অবৈধ হয়ে পড়া অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিরা রয়েছে শীর্ষস্থানে।

এসব মানবপাচার ও ভিসা কেনা-বেচার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেশটির আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘এন্টি-মাফিয়া’ গ্রুপের প্রসিকিউটর জোভান্নি মেলিল্লোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরাতে নতুন কৌশল নিয়ে চিন্তাভাবনার কথা বলা হয়েছে।

ইতালির স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, কৃষি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে।

সেখানে বলা হয়, দেশটিতে বর্তমানে দক্ষ কর্মীদের সংকট রয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় অন্যান্য দেশ থেকে কর্মী নিতে তারা ভিন্ন পরিকল্পনার কথা ভাবছে, যেখানে মধ্যস্থতাকারী ছাড়া বিদেশি দক্ষ কর্মী নিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হবে।

এ বিষয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশটির এন্টি-মাফিয়া দলের প্রসিকিউটর বলেন, “মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশে আমরা ইতালিতে শ্রমিক প্রবেশের প্রতিটি ধাপ এখন থেকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। সব ধরনের মানবপাচারের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে কাজ করে যাচ্ছি। এখন থেকে প্রতিটি কোম্পানির সকল ধরনের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে আবারো পুনরায় আমরা যাচাই বাছাই করে শ্রমিক আনার অনুমতি দেব”।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, বৈধভাবে এবং অবৈধভাবে দুইভাবেই এবছর দেশটিতে বাংলাদেশি নাগরিকরা প্রবেশ করেছে সবচেয়ে বেশি। এক দিকে চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি। আবার গত দুই বছরে বৈধ প্রক্রিয়ায় ইতালিতে প্রবেশের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশিরা শীর্ষে আছে।

২০২২ সালে ইউরোপের দেশটিতে প্রবেশ করা মোট বিদেশি কর্মীর মধ্যে ৪৫.৪ শতাংশ ছিল বাংলাদেশি। আর ২০২৩ সালে ৬১.১ শতাংশ এবং ২০২৪ সালের এখন পর্যন্ত ৫১.১ শতাংশ বাংলাদেশি কর্মী সে দেশে প্রবেশ করেছে।

ইতিালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এদের বেশিরভাগই ইতালিতে সিজনাল ভিসায় এসে স্থায়ীভাবে থেকে যাচ্ছেন, নয়ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশে পালিয়ে যাচ্ছেন।

অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি মাহফুজুর রহমান বলেন, “ইতালির সরকার সবসময় বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক আনার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছু এজেন্সি এবং অসাধু দালাল বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে অদক্ষ শ্রমিকদের ইতালিতে এনে দিচ্ছে। তারা এখানে আসার পরে নির্দিষ্ট সময় শেষ হলেও দেশে ফিরে যাচ্ছে না। বরং তারা অন্যান্য দেশে পালিয়ে যাচ্ছে অথবা অবৈধ অভিবাসীদের মত এখানে বসবাস করছে। বিষয়গুলো ইতালির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।”

তিনি বলেন, “ভিসা বেচা এবং কেনা দুটি অবৈধ কাজ। তাই এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এছাড়া অবৈধ অভিবাসীদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ হাতে নিচ্ছেন।”

ইতালি সরকারের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশি কর্মীদেরকে কেবল ‘নির্ভরযোগ্য এজেন্সির’ ওপর আস্থার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো।

শনিবার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই পরামর্শ দেন। রোববার ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের ওয়েবসাইটে তার ওই সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়।

রাষ্ট্রদূত বলেন, কর্মীদের নিশ্চিত হতে হবে তারা কোথায় কাজ করতে যাচ্ছে, কোন অবস্থায় কী ধরনের চাকরি এবং ইতালির কোন শহরে তারা যাচ্ছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতি পাঁচজনে একজন ভিসা আবেদনকারীর কাছ থেকে ‘অবৈধ কাগজপত্র’ পাওয়ার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, “ইতালিতে পাঠানোর ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগীদের বেশ বড় অঙ্কের অর্থ দেওয়ার চর্চা রয়েছে। এই কাজ অবৈধ, যা ইতালি ও বাংলাদেশ দুই জায়গাতেই হচ্ছে।”

উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে

0

ফের উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকুরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে। কোটা বাতিল চেয়ে ‘বৈষম্যহীন সমাজ’ গড়তে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।

রবিবার (৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কলাভবন, মলচত্বর, ভিসি চত্বর, টিএসসি হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশে মিলিত হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’,‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীদের একটি দল হাইকোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে যান। এসময় শিক্ষার্থীরা ৩০ জুনের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

আন্দোলনে আসা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রোজিনা ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোটা সংসদে বাতিল করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে ভেঙে দিয়েছে। মেধার ভিত্তিতে দেশ গড়ার স্বপ্নকে ধুলিস্যাৎ করেছে। সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভঙ্গ করেছে।

ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া

0

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শনিবার (৮ জুন) ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালের মাহাত্ম্য ছিল আরও এক জায়গায়। ইংল্যান্ড টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের রাজা। দুই সেরার লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডকে ৩৬ রানে হারিয়ে ‘বি’-গ্রুপের শীর্ষস্থানও নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। 

আগে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে সাত উইকেটে ২০১ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ২০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানে থামে ইংল্যান্ড। 

বিশাল রান তাড়ায় ইংলিশদের শুরুটা হয়েছে দুরন্ত। অধিনায়ক জস বাটলার ও ফিল সল্টের ওপেনিং জুটিতে আসে ৪৩ বলে ৭৩ রান। অষ্টম ওভারে অ্যাডাম জাম্পার স্পিনে বোকা বনে যান সল্ট। ২৩ বলে ৩৭ রান করে বোল্ড হন। প্যাট কামিন্সের ক্যাচ বানিয়ে বাটলারকেও ফেরান জাম্পা। বাটলারের ব্যাট থেকে ২৮ বলে ৪২ রান আসে। ওয়ানডাউনে নামা উইল জ্যাকসকে বেশিক্ষণ থাকতে দেননি মার্কাস স্টয়নিস। ১০ রান করে স্টয়নিসের বলে প্যাট কামিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন জ্যাকস।

৯৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে হঠাৎই দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। সুযোগ লুফে নিয়ে চ্যাম্পিয়নদের টুঁটি চেপে ধরে অসিরা। সেই যে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় অস্ট্রেলিয়া, বাকি সময় ইংল্যান্ড সেটি ছিনিয়ে নিতে পারেনি। ১৫ বলে মঈন আলীর ২৫, লিভিংস্টোনের ১২ বলে ১৫ এবং হ্যারি ব্রুকের ১৬ বলে অপরাজিত ২০ রানের শুধু হারের ব্যবধান কমেছে। 

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে চার ওভারে ২৮ রান দিয়ে জাম্পা নেন দুই উইকেট। কামিন্সের শিকারও দুটি, তিনি রান দিয়েছেন চার ওভারে ২৩।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের প্রথম ওভার থেকেই শুরু হয় অসি ব্যাটারদের আগ্রাসন। দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড মিলে ওপেনিং জুটিতে পাঁচ ওভারে তোলেন ৭০ রান। এরমধ্যে মার্ক উডের এক ওভারে তিনটি ছক্কা ও একটি চারে ২২ রান নেন ওয়ার্নার। আগ্রাসী ওয়ার্নারকে থামান মঈন আলী। লোয়ার ডেলিভারিতে মিডল স্টাম্প ভাঙেন ওয়ার্নারের। আউট হওয়ার আগে অসি ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ৩৯ রানের ঝড়। 

১৮ বলে ৩৪ রান করা হেডকে বোল্ড করেন জোফরা আর্চার। দুই ওপেনার ফিরলেও থামেনি অস্ট্রেলিয়ার আগ্রাসন। অধিনায়ক মিচেল মার্শের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ৩৫ রানের ইনিংস। লিয়াম লিভিংস্টোনের বলে জস বাটলার তাকে স্ট্যাম্পড করেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন পুরো আইপিএলে। ইংলিশদের বিপক্ষে অবশ্য রানে ফিরেছেন তিনি। তবে, ২৮ রান করতে খেলেছেন ২৫ বল। ম্যাক্সওয়েলের নামের পাশে যা অনেকটা বেমানান। আদিল রশিদের বলে ডিপ মিড উইকেটে ফিল সল্টের হাতে ধরা পড়েন ম্যাক্স। মাঝে ক্রিস জর্ডানের বলে লিভিংস্টোনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন টিম ডেভিড। আট বলে ১১ রান করেন টিম।

শুরুর মতো শেষেও রানের চাকা সমানতালে সচল রাখে অস্ট্রেলিয়া। মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েডের ব্যাটে অসিরা একটু একটু করে করে চড়ে রান পাহাড়ে। দুজনে মিলে ১৭ বলে গড়েন ৩২ রানের জুটি। জর্ডানের বলে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ হওয়ার আগে স্টয়নিসের ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ৩০ রান। এই উইকেটে নিজের শততম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি উইকেট তুলে নেন জর্ডান। ৯ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়েড।

ইংল্যান্ডের পক্ষে জর্ডান দুটি এবং একটি করে উইকেট নেন মঈন, আর্চার, রশিদ ও লিভিংস্টোন।

গুলশানে পুলিশ সদস্যের গুলিতে কনস্টেবল নিহত

0

ঢাকার গুলশানের বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মনিরুল নামের একজন কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। কাওসার আহমেদ নামের আরেক পুলিশ সদস্যের গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও। গতকাল শনিবার (৮ জুন) দিনগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম।

মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এক কনস্টেবল আরেক কনস্টেবলকে গুলি করেছে। আর দূতাবাসের ওই গাড়িচালককে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে, এখনই তার নাম বলতে পারছি না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গুলি নিক্ষেপকারী মানসিক বিকারগ্রস্ত। তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদকর্মী হাসান আহমেদ রাত সাড়ে ১২টার দিকে এনটিভি অনলাইনকে জানান, তারা ডিউটি শেষ করে অফিসের গাড়িতে ফিরছিলেন। হঠাৎ ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পুলিশের এক সদস্যকে পড়ে থাকতে দেখেন। এতে তাদের চালক গাড়ির গতি থামাতেই পুলিশের একজন সদস্য এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময়ও বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান। তবে কী নিয়ে এমন ঘটনা, তা তাৎক্ষণিক বুঝতে পারেননি, ঘটনা জানারও পরিস্থিতি ছিল না।

এদিকে গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গুলশান কূটনৈতিক এলাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে পুলিশ সদস্য। আমরা খবর পাওয়া মাত্র ঊর্ধ্বতনরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। কিন্তু সেখানে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটিসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।’

রিফাত রহমান শামীম আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে। যতটুকু শুনেছি, গুলি ছোড়া কনস্টেবল মানসিকভাবে বিকারগস্ত। বাকিটা তদন্তে বের হয়ে আসবে।’

অন্যদিকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই সোয়াতের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারা চারপাশ ঘিরে রেখেছে। যে পুলিশ কনস্টেবল গুলি করেছেন, তাকে নিরস্ত্র করা হয়েছে।

কর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তায় ৫৫ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী

0

মানসিক চাপে ভুগছেন দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। এমন চাপ তাদের অনেককে ঠেলে দিচ্ছে ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকির দিকে। কেউ কেউ আত্মহত্যাও করে বসছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই মানসিক চাপ ও হতাশার পেছনে অন্যতম কারণ ভবিষ্যৎ পেশাজীবন দুশ্চিন্তা ও নিরাপত্তাহীনতা। প্রচণ্ড মানসিক অস্থিরতা ও প্রতিকূল পরিবেশে খাপ খাওয়াতে না পারার কারণে ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর মনে আত্মহত্যার চিন্তা এসেছে। ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা ভবিষ্যৎ পেশাজীবন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশনের এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

শুক্রবার ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ’ শিরোনামে জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়। জরিপে বলা হয়, প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে হতাশার বিভিন্ন উপসর্গে ভোগেন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩ শতাংশ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা এ ধরনের উপসর্গের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। প্রায় ৩২ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী সরকারি চাকরি করতে চান, প্রায় ১০ শতাংশ ব্যবসা বা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। মাত্র ৭ শতাংশ বেসরকারি চাকরি করতে চান। পেশাজীবন নিয়ে এখনই কোনো ভাবনা নেই প্রায় ২২ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

জরিপটি চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ মে পর্যন্ত পরিচালিত হয়। দেশের ৮৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১ হাজার ৫৭০ শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৫২ শতাংশ ছাত্রী ও ৪৮ শতাংশ ছাত্র।

৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছেন সহপাঠী ও জ্যেষ্ঠ সহপাঠীদের হাতে; এ হার প্রায় ৮৬ শতাংশ। প্রায় ৩৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্ট। ৫৯ শতাংশ জানান, তারা মন খুলে কথা বলার মতো কোনো শিক্ষক পান না।

জরিপে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের প্রায় ৬ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার চিন্তা এসেছে কিন্তু চেষ্টা করেননি ৩৯ শতাংশ, আত্মহত্যার চিন্তা এসেছে এবং উপকরণও জোগাড় করেছেন ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। প্রায় ৩৬ শতাংশ জানিয়েছেন, তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয় না। ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী এ সম্পর্কে কিছু জানেন না।

সংবাদ সম্মেলনে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী বলেন, পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব রয়েছে, শিক্ষার্থীরা কেন হতাশা এবং বিষণ্নতায় ভুগছে তা বোঝা ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সদিচ্ছা দরকার।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ওবায়দুল্লাহ আল মারজুক, এডিডি ইন্টারন্যাশনালের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (কমিউনিটিভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্প) আবদুল্লাহ আল হারুন। সভাপতিত্ব করেন আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি তানসেন রোজ। জরিপের তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনের গবেষণা ও বিশ্লেষণ বিভাগের সদস্য ফারজানা আক্তার

জয় দিয়ে শুরু বিশ্বকাপ যাত্রা টাইগারদের

0

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দুই উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সাম্প্রতিক অফফর্মের হতাশাও খানিকটা কমল বাংলাদেশের। টানা ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা লিটনরা বিশ্বকাপে পেলেন স্বস্তির সুবাতাস। 

অন্যদিকে এই হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের ঘণ্টা অনেকটাই বেজে গেল শ্রীলঙ্কার। টানা দুই হারে সুপার ফোরের সমীকরণটা কঠিন হয়ে উঠল লঙ্কানদের।  

আজ শনিবার (৮ জুন) বিশ্বকাপের ১৫ তম ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলতে পেরেছেন পাথুম নিশানকা।   

জবাব দিতে নেমে ৬ বল হাতে রেখে ১২৫ রান করে জয়ের নাগাল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। যদিও, ব্যাটিংয়ের শুরুতে বরাবরের মতো ব্যর্থতা ভর করে বাংলাদেশের ওপর। শুরুতেই বিদায় নেন সৌম্য সরকার। ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার সাদামাটা বলে বাজে শট খেলে শূন্যতে বিদায় নেন বাঁহাতি ওপেনার। এরপর হতাশ করেন তানজিদ তামিম। নুয়ান থুশারার ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হন তানজিদ (৩)। চারে নেমে টিকলেন না অধিনায়ক শান্তও। ১৩ বল মোকাবিলা করে অধিনায়কের ইনিংস থামল ৭ রানে। ২৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তখন উইকেটে থেকে আশার পালে সাহস যোগান তাওহিদ ও লিটন দাস। এই জুটিতে জয়ের পথটা সহজ করে ফেলে বাংলাদেশ। মাঝপথে ২০ বলে ৪০ রান করে তাওহিদ ফিরলে লিটনও বিদায় নেন। ৩৬ রান করে হাসারাঙ্গার এলবির ফাঁদে পড়েন ডানহাতি ব্যাটার। দুই সেট ব্যাটার ফেরার পর হারতেই বসেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ক্রিজে থেকে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। জয়ের পথে মাহমুদউল্লাহ করেন ১৬ রান। 

এর আগে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টস জিতে যথারীতি বোলিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। নতুন বলে বাংলাদেশের ইনিংস শুরুটা করেছেন তানজিম হাসান সাকিব। এক বাউন্ডারি হজম করলেও প্রথম ওভারে ৫ রানের বেশি দেননি তিনি। সাকিব আল হাসান দ্বিতীয় ওভারে এসেই রান দেদারসে। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিনের ওভারের প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান কুশল মেন্ডিস। তৃতীয় বলেই বোল্ড। ডানহাতি পেসারের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারি স্টাম্পে টেনে নিয়ে বোল্ড হন মেন্ডিস (১০)।

পঞ্চম ওভারে আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান। নিজের প্রথম বলেই পেয়ে যান সাফল্য। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি উড়িয়ে মারার চেষ্টায় মিড অফে ক্যাচ হয়ে ফেরেন কামিন্দু মেন্ডিস। 

দুই উইকেট হারানোর পরও পাওয়ার প্লেতে ৫৩ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। তার মধ্যে উইকেটে থিতু হয়ে ভয় জাগান পাথুম নিশানকা। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই নিশানকার প্রতিরোধ ভাঙেন মুস্তাফিজ। কাটার মাস্টারের ফুল লেংথ ডেললিভারিতে কাভারের শান্তর ক্যাচ হয়ে ফেরেন নিশানকা। ফেরার আগে ২৮ বলে সাত চার ও এক ছক্কায় ৪৭ রান করেন লঙ্কান ওপেনার। 

তিন টপ অর্ডারের বিদায়ের পর চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়ার আভাস দেন ডি সিলভা ও চারিথ আসালাঙ্কা। নবম ওভারে এসে জোড়া উইকেট নিয়ে ৩০ রানের এই জুটি ভাঙেন রিশাদ। প্রথমে তুলে নেন ১৯ রান করা আসালাঙ্কাকে। এরপর ছয়ে নামা হাসারাঙ্গাকে রানের খাতাই খুলতে দেননি রিশাদ। 

নিজের শেষ ওভারে এসে ডি সিলভাকেও বিদায় করেন রিশাদ। ১৯ রান করা সিলভা বাংলাদেশি লেগ স্পিনারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দ্রুত উইকেট হারানোর মিছিলে বড় পুঁজি গড়তে পারেনি শ্রীলঙ্কা। একের পর এক উইকেট হারিয়ে অল্পতে থামে হাসারাঙ্গার দল।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ২২ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন রিশাদ। ১৭ রান খরচায় মুস্তাফিজুর রহমান নেন তিনটি। ২৫ রানে দুটি নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১২৪/৯ (নিশানকা ৪৭, কুসাল ১০, কামিন্দু ৪, ধানাঞ্জয়া ২১, আসালাঙ্কা ১৯, হাসারাঙ্গা ০, ম্যাথিউস ১৬, শানাকা ৩, থিকশানা ০, পাথিরানা ০*, থুশারা ০*; তানজিম ৪-০-২৪-১, সাকিব ৩-০-৩০-০, তাসকিন ৪-০-২৫-২, মুস্তাফিজ ৪-০-১৭-৩, রিশাদ ৪-০-২২-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪-০)।

বাংলাদেশ :  ১৯ ওভারে ১২৫/৮(সৌম্য ০, তানজিদ ৩, শান্ত ৭, তাওহিদ ৪০, লিটন ৩৬, সাকিব ৮, মাহমুদউল্লাহ ১৬, রিশাদ ১, তাসকিন ০, সাকিব ১; ডি সিলভা ২-০-১১-১, থুশারা, থিকসানা ৪-০-২৫-০, হাসারাঙ্গা ৪-০-৩২-২, পাথিরানা ২-০-২৭-১)।

ফল : দুই উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।

ব্যাংকে টাকা রাখায় খরচ বাড়ছে অনেক

0

ব্যাংকে ধনীদের জমানো টাকায় খরচ বাড়তে যাচ্ছে। ব্যাংকে রাখা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের স্তর ও হারে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পেশের সময় তিনি এ প্রস্তাব করেন।

বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

বর্তমানে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতিতে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হয় না। এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে হয় ১৫০ টাকা এবং পাঁচ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। এই দুটি স্তরে কোনো পরিবর্তন আসছে না।

ব্যাংক হিসাবের টাকা বছরে অন্তত একবার এসব স্তর স্পর্শ করলে আবগারি শুল্ক দিতে হয়।

বর্তমানে ১০ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত যে স্তরটি রয়েছে, সেটি ভেঙে দেয়ার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে তিনি ১০ লাখ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত গচ্ছিত টাকায় আগের মতোই তিন হাজার টাকা আবগারি শুল্ক কেটে রাখার প্রস্তাব করেন। আর ৫০ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত তিন হাজার টাকার পরিবর্তে পাঁচ হাজার টাকা, এক কোটি টাকা থেকে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা এবং দুই কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক করার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী।

বর্তমানে এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতে ১৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক বসে।
কারো ব্যাংক হিসাবে বছরে একবার যদি স্থিতি পাঁচ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে অতিক্রম করে, তাহলে সেই আমানতের ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ আগের মতো ৪০ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক কেটে রাখার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কোনও ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ যদি একবার এক লাখ টাকা বা তার ওপরের স্তরগুলোর সীমা স্পর্শ করে, তাহলে নির্দিষ্ট হারে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। একাধিকবার স্পর্শ করলেও একবারই আবগারি শুল্ক কাটা হয়। কোনো হিসাবে এক লাখ টাকার কম থাকলে কোনও আবগারি শুল্ক কাটা হয় না।

২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বশেষ ব্যাংকে থাকা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ বাড়ানো হয়।

বজ্রপাতে দেশের চার জেলায় আটজনের প্রাণহানি

0

বজ্রপাতে দেশের চার জেলায় একদিনে আটজনের প্রাণহানি ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার (৭ জুন) বজ্রপাতে নওগাঁয় তিনজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিনজন এবং নাটোর ও ঠাকুরগাঁওয়ে একজন করে প্রাণ হারিয়েছেন। এনটিভির জেলা প্রতিনিধিরা এ খবর জানান।

নওগাঁ

বজ্রপাতে নওগাঁর মান্দায় একজন এবং পত্নীতলা উপজেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন মান্দা উপজেলার ভোলাম গ্রামের ফইমুদ্দিনের ছেলে শামসুল আলম (৩৪), পত্নীতলা উপজেলার উপজেলার পাটিচড়া ইউনিয়নের নাগরগোলা গ্রামের বিশা মণ্ডলের ছেলে খাদেমুল ইসলাম (৫০) ও গাহন গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী মনিকা (৩৫)।

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ করেই পশ্চিম আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। কৃষক শামসুল আলম মেঘ দেখে বাড়ির পাশে মাঠে কাজ করতে যান। তার স্ত্রী লালবানুও সঙ্গে ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

অন্যদিকে, পত্নীতলা থানার ওসি মোজাফফর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে কৃষক খাদেমুল ইসলাম মাঠ থেকে ধান বহন করে বাড়ি আনার সময় উঠানে বজ্রাঘাতে নিহত হন। একই সময়ে পৃথক ঘটনায় গৃহবধূ মনিকা বাড়ির সামনে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রাঘাতে নিহত হন। স্বজনরা উদ্ধার করে তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনটি ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ

বজ্রপাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে শিশুসহ দুজন এবং ভোলাহাট উপজেলায় আরেক শিশু নিহত হয়েছে।

নিহতরা হলেন—শিবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীডাঙ্গার সুভাস ভক্তের স্ত্রী ববি ভক্ত (৩২), শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিণপাকা নিশিপাড়ার এরশাদ আলীর মেয়ে কবিতা খাতুন (১১) এবং ভোলাহাট উপজেলার আন্দিপুর হঠাৎপাড়ার ইসলাম আলীর মেয়ে আমেনা খাতুন (১০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর ২টার দিকে বাড়ির সামনে বসে থাকা অবস্থায় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ববি ভক্ত। এ ছাড়া বিকেল ৩টার দিকে বাড়ির পেছনে টিউবওয়েলের পানি আনতে যায় শিশু কবিতা খাতুন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

অপরদিকে, বিকেল পৌনে ৩টায় ঝড়-বৃষ্টির সময় আমবাগানে আম কুড়ানোর সময় বজ্রপাতে আহত হয় আমেনা খাতুন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নাটোর

নাটোরের নলডাঙ্গায় বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও একজন। গতকাল শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার কোমরপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত কামরুল হোসেন (৩৫) উপজেলার কোমরপুর গ্রামের মো. লুৎফর রহমানের ছেলে। আহত হয়েছেন মো. মজনু (৪০) একই গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে। 

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ারুজ্জামান বলেন, দুপুরে মাছ ধরার সময় নলডাঙ্গার ব্রহ্মপুর ইউনিয়নের পীরগাছা এলাকায় বজ্রপাতে একজন মারা গেছে। আরও একজন আহত হয়েছে। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেছে।

ঠাকুরগাঁও

বজ্রপাতে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের রনশিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লিপি আক্তার (৩৫) রনশিয়া গ্রামের ফিরোজ্জামানের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুরে বৃষ্টি নামলে বাড়ির পাশে ভুট্টার গাছের খড়ি ঢাকতে গিয়ে বজ্রপাতে আহত হন লিপি আক্তার। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম এ বিষয়ে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হবে।