দীর্ঘদিন যবাত দেশের শেয়ারবাজার পতনের বৃত্তে আটকে আছে। কিছুতেই বাজারে স্থিরতা আসছে না। একদিন সামনে এগুলে দুদিন পেছায়। যা কারণে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে না। শেয়ারবাজারে গতি না ফেরায় প্রতি মাসেই বিনিয়োগকারীরা বাজার ছাড়ছেন। বিপরীতে নতুন করে বাজারে বিনিয়োগকারীরা আসছেনও। তবে ছাড়ার তুলনায় আসার সংখ্যা কম।
মে মাসজুড়ে চলা পতনের কারণে মাত্র ১৯ কার্যদিবসে শেয়ারবাজার ছেড়েছেন প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার বিনিয়োগকারী। তার বিপরীতে পুরো মাসে শেয়ারবাজারে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ৮ হাজার বিনিয়োগকারী। ফলে যত বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন, তার প্রায় অর্ধেক বিনিয়োগকারী নতুন করে বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খুলে বাজারে যুক্ত হয়েছেন।
শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শেয়ার ধারণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএলের তথ্য থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ এপ্রিল শেয়ারবাজারে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫টি। আর মাসের শেষ কার্যদিবসে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৮টিতে। অর্থাৎ মে মাসজুড়ে ১৫ হাজার ৪৯৩ জন বিনিয়োগকারী তাদের হাতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন।
শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কমেছে শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা। মে মাসের শেষ কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে সক্রিয় তথা শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার ৩২৯টিতে। অথচ এপ্রিলের শেষ দিনে শেয়ারসহ বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩৯টি। শেয়ারবাজারে যেসব বিও হিসাবে শেয়ার থাকে, সেগুলোকেই মূলত সক্রিয় বিও হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে সব মিলিয়ে ডিএসইর প্রধান সূচকটি ৩৩৩ পয়েন্ট বা সাড়ে ৬ শতাংশ কমেছে। মে মাসের শুরুতে ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল ৫ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টের অবস্থানে। গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটি কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২৫২ পয়েন্টে। এ কারণেই বেড়েছে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে শেয়ারবাজার ছেড়ে যাওয়া বিনিয়োগকারীর সংখ্যা। সিডিবিএলের হিসাবে, গত এপ্রিলেও প্রায় ১৬ হাজার বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজার ছেড়ে গিয়েছিলেন। সেই হিসাবে গত দুই মাসে প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়েছেন।