ফারুক আহমেদ তাহলে আর বিসিবি সভাপতি থাকছেন না? অবস্থাদৃষ্টে পরিস্থিতি সে রকমই মনে হচ্ছে। তবে তিনি কতটা স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছাড়ছেন, সেটা একটা প্রশ্ন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আজ রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাসভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন ফারুক। ক্রীড়া উপদেষ্টা আলোচনায় ফারুককে বার্তা দিয়েছেন যে বিসিবির শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন তাঁরা।
তবে কেন পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন, সে ব্যাখ্যা নাকি পাননি ফারুক। মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ফারুক। তবে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।
গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নাজমুল হাসানের বোর্ডে থাকা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত দুই পরিচালক জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলমকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তাঁদের পরিবর্তে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ এবং ক্রিকেট কোচ ও বিশ্লেষক নাজমূল আবেদীনকে এনএসসি তাদের নতুন পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয়। পরে পরিচালকদের ভোটে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক। এর আগে বোর্ড সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন নাজমুল হাসান।
ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে যেহেতু আইসিসির অবস্থান কঠোর, সরকার চাইলেই বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনতে পারে না। বিসিবির পরিচালক এবং সভাপতিকেও হতে হয় নির্বাচিত।
ফারুক এনএসসি মনোনীত পরিচালক হওয়ায় সে মনোনয়নে এনএসসি হয়তো পরিবর্তন আনতে পারে, কিন্তু তিনি যেহেতু এখন নির্বাচিত সভাপতি; স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে সরকার তাঁকে সরিয়ে দিতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
সে রকম কোনো সিদ্ধান্ত সংকটে ফেলতে পারে বাংলাদেশের ক্রিকেটকেই। এর আগে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে সরকারি হস্তক্ষেপের মাশুল দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে হয়েছিল।
অবশ্য ফারুক আহমেদ যদি নিজ থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে ভিন্ন কথা। একটি সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য দু–এক দিন সময় চেয়েছেন ফারুক। পদত্যাগ করলে খুব দ্রুতই তিনি তা করবেন।
কয়েক দিন ধরেই গুঞ্জন, তিন মাসের জন্য বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব নিতে পারেন জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল, আগামী মাসেই যাঁর আইসিসিতে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
এমনও শোনা গেছে, আমিনুলকে প্রধান করে নাকি অক্টোবরে বিসিবির আগামী নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করবে সরকার। বিসিবির বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অবশ্য সে রকম কিছু করার সুযোগ নেই।
আমিনুলের ব্যাপারে আরেকটি আলোচনা, বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাঁর। কিন্তু সূত্র জানিয়েছে, এ রকম একটি আলোচনায় আমিনুল নাকি দায়িত্বটি নিতে বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দ্বিগুণ বেতন চেয়েছেন, যেটি প্রায় ১২ লাখ টাকা।
বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আজ রাতে আমিনুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। তবে ফারুকের সঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টার আলোচনার সময় আমিনুল সেখানে ছিলেন না বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।