আজ লন্ডনের ওয়েম্বলিতে চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে–অফের ফাইনালে সান্দারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে হামজা চৌধুরীর শেফিল্ড ইউনাইটেড। এই ম্যাচের জয়ী দল সামনের মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে খেলবে। বিশ্বজুড়ে সব দেশের প্রিমিয়ার লিগে উত্তরণ, অবনমন সাধারণ ঘটনা। আর সেই নিয়মের অংশ হিসেবেই প্রতিবছর নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্লাব নিচের স্তর থেকে ওপরের স্তরে ওঠে। শেফিল্ড–সান্দারল্যান্ডের ম্যাচও তেমনই একটি।
তবে আজকের শেফিল্ড–সান্দারল্যান্ড ম্যাচটি অন্য সব প্লে–অফ ম্যাচের তুলনায় ভিন্ন। চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে–অফ ফাইনালকে বলা হয়ে থাকে ‘ফুটবলের সবচেয়ে দামি ম্যাচ’। এমনই দামি যে এই ম্যাচের জয়ী দলের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে প্রায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৬৫ কোটির বেশি টাকা।
চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে–অফ ফাইনাল এত বেশি অর্থের ম্যাচ হয়ে ওঠার কারণ প্রিমিয়ার লিগের আর্থিক সামর্থ্য। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অর্থকরী লিগটিতে প্রতি মৌসুমে খেলে ২০টি দল। প্রতিবছর পয়েন্ট তালিকার শেষ তিনটি দল দ্বিতীয় স্তর তথা চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে যায়। আর চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে শীর্ষ দুটি দল ও প্লে–অফের মাধ্যমে আরেকটি দল উঠে আসে। এ বছর এরই মধ্যে চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে প্রিমিয়ার লিগে জায়গা করে নিয়েছে লিডস ইউনাইটেড ও বার্নলি। তৃতীয় জায়গাটির লড়াই চলছে সান্দারল্যান্ড ও শেফিল্ডের মধ্যে।
শেফিল্ড ২০২৩–২৪ মৌসুমেও প্রিমিয়ার লিগে খেলেছে, তবে টিকে থাকতে পারেনি। আর ২০১৭ সালে অবনমিত হওয়ার পর সান্দারল্যান্ড এখনো প্রিমিয়ার লিগে ফিরতে পারেনি। দুই ক্লাবের সামনে প্রিমিয়ার লিগে ফেরার পাশাপাশি বড় অঙ্কের অর্থ হাতছানি দিচ্ছে একাধিক কারণে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলের মধ্যে সম্প্রচারস্বত্ব ও স্পনসরশিপ থেকে পাওয়া আয় ভাগ করে দেয়। এ ছাড়া ম্যাচ ডে থেকেও আসে ভালো আয়। সিবিএস স্পোর্টস বলছে, সব মিলিয়ে প্রিমিয়ার লিগে উঠলেই একটি দল প্রায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলারের মতো আয় করে থাকে।
২০২০ সালে আর্থিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডেলয়েটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে–অফ ফাইনালে জেতা দল ১৬.৭ কোটি থেকে ৩২.৮ কোটি ডলার পর্যন্ত বাড়তি আয়ের মালিক হতে পারে। ২০২০–২১ মৌসুমের অফিশিয়াল তথ্যই বলছে, সে মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের ২০টি দলের মধ্যে শুধু সম্প্রচার আয় বাবদই ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। ইংল্যান্ড এবং বাকি বিশ্ব—দুই শ্রেণির সম্প্রচার আয়ই দেওয়া হয়। প্রিমিয়ার লিগে ওঠার পর যে দল যত বেশি সময় টিকে থাকে, আয়ের পরিমাণও তত বাড়ে।
কোনো দল চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে প্রিমিয়ার লিগে ওঠার এক মৌসুম পরই যদি আবার নেমে যায়, তবু ‘প্যারাশুট মানি’ নামে একটি অংশ পায়, যা তিন বছর ধরে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের হামজা মূলত লেস্টার সিটির খেলোয়াড়, শেফিল্ডে খেলছেন ধারে।
মৌসুম শেষে লেস্টারে ফিরে যাবেন, নাকি শেফিল্ড তাঁকে কিনে নেবে, সেটা আপাতত অজানা। তবে শেফিল্ডের হয়ে মৌসুমের শেষবেলায় ‘ফুটবলের সবচেয়ে দামি ম্যাচ’টাই খেলতে যাচ্ছেন তিনি। শেফিল্ড–সান্দারল্যান্ড ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ১ মিনিটে।