Sunday, November 17, 2024
Homeখেলাধুলাপাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টেষ্ট জয় বাংলাদেশের

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টেষ্ট জয় বাংলাদেশের

রাওয়ালপিন্ডিতে জয়ের চিত্রটা চতুর্থ দিনই এঁকে দিয়েছিলেন হাসান মাহমুদ-নাহিদ রানারা। পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে লক্ষ্যটা বেঁধে দিয়েছিলেন দুইশর নিচে! অপেক্ষা ছিল শেষ দিনের। পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশনেই ধরা দিল সেই অধরা স্বপ্ন। পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডুবাল বাংলাদেশ। 

টেস্ট ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে চতুর্থ ইনিংসে এই রান তোলা কঠিন হলেও বাংলাদেশ সেটা পেরেছে সহজভাবে। কারণ, এর আগেও ছিল এমন অতীত অভিজ্ঞতা। যা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে পাকিস্তানে জয়ের নতুন গল্প লিখল বাংলাদেশ।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অধীনে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দুটিতেই পাকিস্তানকে হারিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। নিজেদের ২৪ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েকেই কেবল হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। এবার সেই তালিকায় যোগ হলো পাকিস্তানের নাম। তা ছাড়া পাকিস্তানের ঘরের মাঠে কেবল ইংল্যান্ডই পেরেছিল তাদের হোয়াইটওয়াশ করতে। ইংলিশদের পর এবার বাংলাদেশের কাছে একই লজ্জা পেলেন বাবর আজমরা।    

শেষ দিনে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৪৩ রান। দিনের প্রথম সেশনে ৮০ রান যোগ করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনেই পৌঁছে যায় কাঙ্খিত লক্ষ্যে।

গতকাল চতুর্থ দিনের শেষ সেশন ভেসে যায় বৃষ্টিতে। পঞ্চম দিন অবশ্য তা হয়নি। আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঝলমলে আবাহওয়ার দিনে শুরুটা ভালোর আভাস দেন দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। জুটিটা থিতু হতে দেননি মির হামজা। স্কোরবোর্ডে ১৫ রান যোগ করতেই ভাঙেন এই জুটি। জাকিরকে বোল্ড করে ৪০ রানে থামান হামজা। ৫৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আর ৩৯ বলে তিন বাউন্ডারি আর দুই ছক্কায় সাজানো ছিল জাকিরের ইনিংস। 

জাকির ফেরার কিছুক্ষণ পরে থামেন সাদমান। খুরাম শেহজাদের করা হাফভলিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। মিড অনে ক্যাচ লুফে নিয়ে ২৪ রানে তাকে সাজঘরে পাঠান শান মাসুদ।

৭০ রানে জোড়া উইকেট হারানোর পর রান তোলায় আর তাড়াহুড়ো করেনি বাংলাদেশ। উইকেটে এসে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। দুজনেই পাকিস্তানি ব্যাটারদের খেলেন দেখেশুনে। উইকেটে নির্ভার থাকা এই জুটিতে ভর করেই প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ।

এই সেশনে ২৭ ওভারে দলীয় স্কোরটা ১২২ রানে নিয়ে যান শান্ত ও মুমিনুল। মধ্যাহ্ন বিরতির পর খেই হারান শান্ত। সালমান আলি আঘার সাদামাটা এক ডেলিভারিতে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫ চারে ৮২ বলে ৩৮ রান করে থামে তার ইনিংস। ৫৭ রানে ভাঙে তৃতীয় উইকেট জুটি। অধিনায়কের বিদায়ের পর টিকলেন না মুমিনুলও। ৭১ বলে ৩৪ রান করে আবরারের বলে থামেন তিনি। দুই সেট ব্যাটার ফিরলে  মুশফিককে সঙ্গে করে বাকি পথ পাড়ি দেন সাকিব আল হাসান। শেষ দিকে নেমে সাকিব করেন ২১ রান। তার সঙ্গে থাকা মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ২২ রান।

এর আগে এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে আগে ব্যাট করতে নেমে ২৭৪ রান করে পাকিস্তান। বিপরীতে প্রথম ইনিংসে লিটন দাসের সেঞ্চুরি আর মেহেদী মিরাজের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ করে ২৬২ রান। ১২ রানের লিড পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে পাকিস্তান করে ১৭২ রান। হাসানের ফাইফার আর নাহিদ রানার গতির ঝলকে বাংলাদেশকে ১৮৫ রানের বেশি লক্ষ্য দিতে পারেনি শান মাসুদের দল। যার জবাব দিতে নেমে পঞ্চম দিনের দুই সেশনেই বাজিমাত বাংলাদেশের। জিতে নেয় পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম সিরিজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

প্রথম ইনিংস (পাকিস্তান) : ৮৫.১ ওভারে ২৭৪/১০

প্রথম ইনিংস (বাংলাদেশ) : ৭৮.৪ ওভারে ২৬২/১০

দ্বিতীয় ইনিংস (পাকিস্তান) : ৪৬.৪ ওভারে ১৭২/১০ (শফিক ৩, আইয়ুব ২০, খুররাম ০, মাসুদ ২৮, বাবর ১১, শাকিল ২, রিজওয়ান ৪৩, সালমান ৪৭, আলী ০, আবরার ২, হামজা ৪; তাসকিন ১০-১-৪০-১, হাসান ১০-১-৪৩-৫, মিরাজ ৮-০-২৪-০, রানা ১১-১-৪৪-৪, সাকিব ৭-২-১৪-০)।

দ্বিতীয় ইনিংস (বাংলাদেশ) :  ৫৬ ওভারে ১৮৫/৪ (জাকির ৪০, সাদমান ২৪, শান্ত ৩৮, মুশফিক ২২, মুমিনুল ৩৪; সাকিব ২১ হামজা ১৪-৪-৪৬-১, খুররাম ৭-০-৪০-১, আবরার ১৪-৩-৪০-১, আলী ১৭-৩-৩৭-০, সালমান ৪-১-১৭-১)।

ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ : বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে জয়ী।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments