জামায়াত জোটে নির্বাচনে যাবে না, এককভাবে নির্বাচনে যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এটা বলার এখনো সময় আসেনি। উপযুক্ত সময় আমাদের দেখিয়ে দেবে ও আপনারাও জানতে পারবেন যে জোটগতভাবে হবে, না এককভাবে হবে। না কারও সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে হবে। এটা বলার সময় এখনো আসেনি।
সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন জামায়াত আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপি নির্বাচনের জন্য আলটিমেটাম দিয়েছিল আবার এখন রোডম্যাপ দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে। পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি, বিএনপির জায়গা থেকে যেটি উত্তম মনে করেছে, সেটিই তারা করেছে।
সাড়ে ১৫ বছরে দেশে অনেক জঞ্জাল সৃষ্টি হয়েছে। সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চরমভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। যার কুফল ১৫ বছরে জাতি ভোগ করেছে। এতগুলো জঞ্জাল ঠিক করা ৩ মাসে সম্ভব হবে না বলে মনে করেন না ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, যদি দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ না এনে, নির্বাচন করা হয় সেই নির্বাচন জাতির জন্য আরেকটা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। আমাদের কথা হচ্ছে, সময়টা হতে হবে যৌক্তিক। এটা ৩ মাসও নয়, ৩ বছরও নয়। এর জন্য মিনিমাম যে সময়টুকু লাগে সে সময়টুকু দেওয়া উচিত।
জামায়াত আমির বলেন, এ সরকার তো কোনো দলীয় সরকার না, যে এর বিরুদ্ধে দাবি জানাতে হবে। আবার এখনই দাবি জানানোর মতো কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয়নি। জনগণের প্রত্যাশিত বিপ্লবের দ্বারা জনগণের দ্বারা সিলেকটেড এই সরকার। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, সঠিক পথে যেন এ সরকার এগোতে পারে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা। আর এ সরকার যদি কোনো ভুল করে তাদের পরামর্শ দেওয়া। সেটাতে যদি সংশোধন না হয়। তাহলে আমরা প্রতিবাদ করব। এটা নিয়ে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু তাদের যৌক্তিক সময় দেওয়ার পক্ষে জামায়াত ইসলাম।
এখন প্রশ্ন হতে পারে যৌক্তিক সময়টা কতদিন? সেই যৌক্তিক সময়টা আমরা সপ্তাহ-মাস বলছি না। এটা যদি ৩ মাসে সম্ভব হয় ৩ মাস, আর ৬ মাসে সম্ভব হলে ৬ মাস। তবে এটা বেশি সময় নেওয়া জাতির জন্য কল্যাণকর হবে না। যতটুকু মিনিমাম সময় দরকার সেটাই নেওয়া উচিত ।
বিএনপি নির্বাচনের জন্য তোড়জোড় করছে আমরা এই মুহুর্তে নির্বাচনকে প্রাধান্য দিচ্ছি না। এসময় জাতির ক্রাইসিস রক্তের দাগ, ক্ষতবিক্ষত হওয়া শহিদ পরিবারগুলো, বিভিন্ন জেলায় বন্যার কবলে পড়ে পড়েছে। এটাকে আমরা এই মুহূর্তের রাজনীতি হিসেবে নিয়েছি। এটাকে কেউ যদি রাজনীতি বলে রাজনীতি, আবার কেউ যদি বলে মানবিক দায়িত্ব তাহলে মানবিক দায়িত্ব।
আমরা মনে করি, এ বিষয়গুলো সমাধান না করে নির্বাচনের কথা তোলা, যৌক্তিক মনে করি না। তাই আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি না। মানুষের এ বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য আল্লাহ আমাদের যতটুকু সামর্থ্য দিয়েছেন সেটুকু চেষ্টা করে যাব।